Select Language

[gtranslate]
৯ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার ২৫শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

।। জীবনের রং ।।

দেবী পাল সরকার :- আজ আমার বিয়ে । সবাই বলছে পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে ও কনের সাজে আমাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।
আমার সেই কাজল কালো ডাগর চোখ,জোড়া ভ্রুর নিচে টিকালো নাক, পিঠের উপর ছড়ানো একরাশ কালো কুচকুচে চুল আর আমার মুখের মিষ্টি হাসি নাকি সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে লাস্যময়ী করে তুলে।
যদি ও এটা আমার দ্বিতীয় বিয়ে, তবুও আমার মা বিয়ের আড়ম্বরে কোন কার্পণ্য করেননি। বরং আগের বারের চেয়ে বেশি ই তিনি করছেন।

আমি আয়েশা টি আই টি কলেজের লেকচারার। আমার হবু বর আশিষ হলো ব্যবসায়ী। উনার মুড়ির ব্যবসা।

সবাই হয়তো ভাবছেন, মুড়ির ব্যবসায়ী কে আমি অধ্যাপক হয়ে বিয়ে করছি কেন ?

তার পিছনে ও অনেক কাহিনী । আসলে আমার বর্তমান মা ,যিনি আমাকে বিয়ে দিয়ে বিদায় করতে চাইছেন, তিনি হলেন আমার শাশুড়ি মা ।
আমার প্রথম স্বামী অরিন্দম এর মাতা ।
অরিন্দম যখন দুবছরের , তখন ই এক ঝড় জলের রাতে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে গাড়ি এক্সিডেন্ট এ অরিন্দম এর বাবার মৃত্যু হয়।

অরিন্দম এর ঠাকুরমা, মা ও ছেলেকে অপয়া অলক্ষ্মী অপবাদ দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমার শাশুড়ি সুরবালা ছেলে অরিন্দম কে নিয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। বাবা যতদিন জীবিত ছিলেন, মেয়ে,নাতিন এর খাওয়া পড়ার অভাব হয়নি। দুই দাদা ও বৌদি রাও ভালো ব্যবহার করতো।

বাবা যেদিন চোখ বুজলেন, মেয়ের দুর্গতি শুরু হলো । মাকে তো আগেই হারিয়েছিলেন। এবার বৌদি রাও উঠতে বসতে খোটা দেওয়া ,সুযোগ পেলে ছেলেটা ও কে কটুকথা শুনাতে ছাড়তো না। দাদা রা স্ত্রীদের বিরুদ্ধে গিয়ে বোনের পক্ষে কিছুই বলতে সাহস পেত না ।

এমতাবস্থায় শাশুড়ি মা ছেলেকে নিয়ে একদিন শেষ রাতে বেরিয়ে এসে মন্দিরে আশ্রয় নেন।
সকালবেলা রোজ মন্দির ঝাঁট দেন একজন ভক্ত । উনার কয়েকবছর যাবৎ খুব কোমড়ে ব্যথা । অনেক ডাক্তার বদ্যি করেও কাজ হচ্ছিলো না । ঠাকুরের প্রতি অগাধ আস্থা ও বিশ্বাস । তিনি নাকি স্বপ্নে জগন্নাথ কে দেখেছেন। বলছেন , “রোজ সকাল বিকাল আমার মন্দির প্রাঙ্গন ঝাঁট দিয়ে , জল দিয়ে পরিষ্কার করে দিবি । তাতে তোর্ কষ্ট দূর হবে”।

সেই থেকে তিনি অগাধ বিশ্বাস নিয়ে তাই করে চলেছেন , আজ তিন বছর । ভালো ই আছেন। কিন্তু এখন সেটা করতে তিনি অন্তরের টান অনুভব করেন। কখন সকাল হবে ,আর মন্দিরে আসবেন,সে চিন্তায় রাতে ছটফট করেন।

সেই সহৃদয় ব্যক্তি সবকিছু শুনে শাশুড়ি মা ও ছেলেকে উনার বাড়িতে নিয়ে গেলেন। স্ত্রী আর এক ছেলেকে নিয়ে উনার সংসার। বাড়িতে মুড়ি ভেজে দোকানে দোকানে বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে ই সংসার চলে।

সংসারে এখন আরো দুটি পেট বাড়লো। তিনি শাশুড়ি মা কে বললেন , “”চিন্তা করিস না বোন, পেট দিয়েছেন যিনি, আহার দেবেন
তিনি “।
“আমরা যা খাবো , তুই আর তোর ছেলে ও তাই খাবি “।
আমার শাশুড়ি র নামে, বিশ হাজারের দুটি কিষান বিকাশ পত্র সাড়ে ছয় বছরের মেয়াদে উনার বাবা করে রেখেছিলেন। ভবিষ্যতে নাতির পড়াশুনা র জন্য।
শাশুড়ি মা একটিকে ভাঙ্গিয়ে টাকা তুলে নিলেন। তার কিছু টাকা পাতানো দাদার হাতে দিয়ে পুরো উদ্যোমে মুড়ির ব্যবসা শুরু করলেন।
প্রথমে বাড়ি বাড়ি মুড়ি বিক্রি করতেন । তারপর কিছু কিছু দোকানে দিতে লাগলেন। আস্তে আস্তে পুরো বাজারে উনার মুড়ি বিখ্যাত হয়ে গেল ।
ততোদিনে বার বছরের অরিন্দম অনেক বড়ো হয়ে গেলো। অরিন্দম আর আশিষ মাধ্যমিক পাশ করে টি আই টি তে ভর্তি হলো ।ডিপ্লোমা শেষে অরিন্দম ডিগ্রী করতে চেন্নাই গেল । কিন্তু দুর্ভাগ্য বশতঃ আশিষ এর বাবা , আমার মায়ের আশ্রয়দাতা হঠাৎ করেই স্ট্রোক করে মারা যান।

মায়ের হৃদয় ভেঙে চুরচুর হয়ে গেল।মায়ের কাছে উনি ছিলেন স্বয়ং ভগবান,দেব পুরুষ ।

কিন্তু মায়ের ভেঙে পড়লে তো চলবে না।মুড়ির ব্যবসা কে ধরে রাখতে হবে ।

“সুরবালা ‘স মুড়ি “এখন গ্রাম ছেড়ে শহরে ও পাড়ি দেয় ।ভোর ছয়টায় তালতলা থেকে যে বাসটা ছাড়ে শহরের উদ্দেশ্যে তার অর্ধেক ই ভর্তি থাকে সুরবালা র তৈরি মুড়ির বস্তায়।

মা অনেক চেষ্টা করেও আশিষ কে আর পড়ায় রাজি করাতে পারেনি। সে ও মায়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ব্যবসায় নেমে পড়ে।

অরিন্দম চেন্নাই থেকে এম টেক করে সেখানেই এম এন সি তে চাকরি তে জয়েন
করে । কিন্তু ওর কোম্পানির চাকরিতে মন বসছিল না বলে স্কলারশিপ এর জন্য চেষ্টা করে শিলচর এন আই টি তে, পি এইচ ডি করার সুযোগ পায়। প্রতিমাসে পঁচিশ হাজার টাকা স্কলারশিপ থেকে নিজের খরচ রেখে বাকিটা মায়ের হাতে তুলে দিতো। মা সেই টাকা ব্যাংকে জমিয়ে সস্তায় জমি কিনে নেয়।

আমার সেখানে ই ওর সঙ্গে পরিচয় । আমি তখন বি টেক করছি ।
পরিচয় ভালোলাগায় , ভালোলাগা ক্রমে ক্রমে ভালোবাসায় । ধীরে ধীরে আমরা একে অপরের প্রেমে ডুবে গেলাম ।

আমার এম টেক শেষ হওয়ার দুতিন মাস আগেই সে ডিগ্রী পেয়ে যায় এবং অরুনাচল ভি আই টি তে চাকরি পেয়ে যায়। চাকরি পেয়ে সে মাকে ওর সঙ্গে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু মা তার পাতানো দাদার সংসার ,বা ছেলে বৌদি ,ব্যবসা এসব ছেড়ে, এককথায় যাদের দয়ায় আজ তিনি এখানে পৌঁছেছেন, ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ করতে পেরেছেন , তাদের কে ছেড়ে যেতে উনার মন চাইছিলো না।
এদিকে আমি ও ভীষন ভেঙে পড়ি।যদি সে আমায় ভুলে যায় ?
তখন আমি ই বিশেষ জোড় দিয়ে ওকে বললাম “,যদি যেতে চাও, বিয়ে টা সেরে তবেই যাও “।
অগত্যা আমার বাড়ির সবার অনুমতি ক্রমে একদিন ধুমধাম করে আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের আচার অনুষ্ঠান শেষে পনের দিন পর সে চলে যায় অরুনাচল।
আমি বাবার বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা চালিয়ে গেলাম। এম টেক এর পর বাবা আমাকে স্কলারশিপ এর জন্য চেষ্টা করতে বললেন। বললেন, তাহলে দুজনে ভবিষ্যতে একি সঙ্গে চাকরি করার সুযোগ পাবি।
আমি তখন অরিন্দম এর স্বপ্নে বিভোর। সে বলেছে একবছরের আগে ছুটি পাবে না। তাই পরীক্ষা শেষে আমি যেন ওর মায়ের কাছে চলে যাই ।
আমি তাই করলাম ।মা তখন আশিষ দের বাড়ির পাশেই কেনা জমিতে একতলা দালান কোঠা বানিয়েছে। আমি মায়ের কাছে গিয়ে ই থাকতে লাগলাম।

আমি বুঝতেই পারতাম না, তিনি আমার নিজের মা নন। বেশ কিছুদিনের মধ্যেই দুজনে বন্ধু হয়ে গেলাম। মা মেয়ে মিলে ঘন্টার পর ঘন্টা অরিন্দম এর সঙ্গে কথা বলতাম,ভিডিও কল করতাম ।
আমার ও শাশুড়ির মধ্যে এতো মধুর সম্পর্ক দেখে সে বলতো, “আমি তো জানতাম শাশুড়ি ও বৌমা র মধ্যে সাপে নেউলে সম্পর্ক থাকে । তোমরা দেখছি মা ও মেয়ের সম্পর্ককেও হার মানিয়ে দেবে ।”
তারপর বলতো, “যাক, তোমাদের দুজনের বন্ডিং দেখে আমার চিন্তা দূর হলো।”

আমরা মা মেয়ে দিন গুনতাম, অরিন্দম এর ফিরে আসার।সে বলেছিল, একবছর পর এসে এখানের পাঠ চুকিয়ে আমাদের কে ওখানে নিয়ে যাবে।মা যাতে ব্যবসার সব হিসাবপত্র আশিষ কে বুঝিয়ে ওর নাম করে দেয়।
মা ও সেইমতো এগিয়ে চলছিল।

কিন্তু বিধাতার কলমে অন্য কিছুই লেখা ছিল। একবছর পূর্ণ হওয়ার তিনমাস আগে ই আমাদের জীবনে নেমে এলো ঘোর অমানিশা।

বর্ষার সেই ঘনঘটা কালরাত্রি আমাদের মা মেয়ের জীবন কে বদলে দিল। সেদিন সকাল থেকেই খুউব বৃষ্টি হচ্ছিল। আমার জন্মদিন ছিল বলে মা আমার পছন্দের, অনেক পদ রান্না করে আমাকে খুউব যত্ন করে খাইয়ে দিল একদম নিজের মায়ের মতো।
সন্ধ্যায় আশিষ একটা কেক নিয়ে আসলো। পরক্ষণেই অরিন্দম ভিডিও কল করে বললো, “তুমি কেক টা কাটো, সুইটহার্ট, আমি দেখবো।”

এরপর অনেক হাসাহাসি, আনন্দ উল্লাসে ভরে উঠলো ঘর। অনেক রাত অবধি দুজনের কথা হলো। কথায় কথায় একসময় আবেশে চোখ বন্ধ হয়ে এলো, আমি ঘুমিয়ে পড়ি। মা আমার গায়ে চাদর টেনে দিয়ে, নিজে ও আমার পাশে শুয়ে পড়ে।

ভোরের দিকে দৈত্যের মতো ফোনটা বেজে উঠে। ঘড়িতে তখন ছয়টা চল্লিশ। চোখে মুখে মা মেয়ের তখনো ঘুমের রেশ।
মা ই ফোনটা রিসিভ করে। সেকেন্ডের মধ্যেই মা শক্ত পাথর হয়ে গেল ।ফোনটা হাত থেকে পড়ে গেল।
ওপ্রান্ত থেকে হ্যালো হ্যালো সমানে চলছে। আমি ফোনটা কানের কাছে ধরি।
চিৎকার করে উঠি, “অসম্ভব !রাত দুটো অবধি দুজনে কথা বলেছি ।”
ওদিকে কান্না মিশ্রিত স্বরে বলছে, সত্যি বৌদি, ডাক্তার এসে ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে গেছে। এখন বডির পোস্ট মর্টেম হবে।

আমার মুখ দিয়ে অস্ফুটে বেরিয়ে এলো। “বডি”, “পোষ্ট মর্টেম”।

আমার অরিন্দম, আমার প্রেমিক, স্বামী ,যার সঙ্গে কাল রাতে কয়েকঘন্টা আগে ও কথা বলেছি , চেহারা দেখেছি,হাসি ঠাট্টা করেছি ,সে “বডি” হয়ে গেল। আমার জীবনের সব রং মুছে নিয়ে গেল।
হঠাৎ ই মায়ের দিকে চোখ পড়লো।মাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠলাম। মা যেন পাথরের মূর্তি।
হবে ই বা না কেন! সারাজীবন সংগ্রাম করেছে আমার মা । সাড়ে তিন বছরের বিবাহিত জীবন।দুই বছরের ছেলেকে মানুষ করতে গিয়ে অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন। যখন ছেলের কোলে মাথা রেখে বাকি জীবন কাটানোর স্বপ্ন দেখছিলেন, বিধাতা ছেলেকে ই তুলে নিলেন।

দুঃসহ বেদনায় পাথর হয়ে যাওয়া মাকে বাঁচাতে আমি দৃঢ় সংকল্প নিলাম। মুছে নিলাম চোখের জল।
আমার চোখের নোনা জল গাল বেয়ে চিবুক স্পর্শ করতে দিলাম না। আমার ডাগর ডাগর কাজল কালো চোখের মধ্যে ই মহাদেবের জটার মতো সমস্ত দুঃখ কষ্ট বেদনা ধারন করলাম।

পোষ্ট মর্টেম রিপোর্ট বললো, হার্ট অ্যাটাক। অরিন্দম এর রুম মেট কাম কলিগ, কফিন বন্দী অরিন্দম কে নিয়ে এলো।
সমস্ত হাহাকার আমার এই পঁচিশ বছরের বুকে চেপে রেখে যা যা নিয়ম কানুন সবই পালন করলাম।
আমার মা বাবা আমাকে উনাদের সঙ্গে নিয়ে যেতে চাইলেন। শাশুড়ি মা বললেন, “চলে যা
আশু, আমার দুর্ভাগ্য তোকে ও জ্বলে পুড়ে রাখ করে দেবে। যৌবনে স্বামী খেয়েছি , এখন বুড়ো বয়সে ছেলে কে খেলাম । তুই চলে যা আশু, চলে যা “।
আমি মাকে জড়িয়ে ধরে উনার গালে গাল রেখে বসে রইলাম। অরিন্দম আমার কাছে মাকে রেখে শান্তিতে ফিরে না আসার দেশে পাড়ি দিলো । আমি ওর বিশ্বাস কি ভাবে ভঙ্গ করি বল?
দুতিন বছর কেটে গেল মায়ের সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে।
আমি মায়ের কাছে কাছে থাকবো বলেই টি আই টি তে পার্ট টাইম জব নিলাম। ধীরে ধীরে রেগুলার হলাম । কিন্তু মায়ের “মুড়ি র” ব্যবসা বন্ধ হতে দিলাম না।
মায়ের বয়স হয়েছে, আশিষ ই সবকিছু দেখছে, আমি মায়ের প্রতিনিধিত্ব করছি ।

মা আমাকে রোজ একবার বলে, “আশু, তুই বিয়ে কর । আমি শান্তিতে চোখ বুজি। আমার অবর্তমানে চিল শকুনের দল তোকে খুবলে খুবলে খাবে আশু “।

আমি বলি, “তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না আমি।”
একদিন মায়ের রুদ্র মূর্তির সামনে আমাকে হার মানতে হলো।
“তুই যদি বিয়ে না করিস, কাল থেকে তোর্ চাকরি করতে হবে না। হাত পা ভেঙে ঘরে বসিয়ে রাখবো ।রোজ রোজ এই টেনশন আমার ভালো লাগে না “।

আশিষ তখন সামনেই দাঁড়িয়ে। আমি তখন মুখ ফসকে বলে উঠি, “তুমি আমায় বিয়ে করবে আশিষ?”
উদ্দেশ্যে একটাই।এ বাড়িতে মায়ের কাছে থাকা।
আশিষ এর দপ করে জ্বলে উঠা চোখ দুটি লজ্জায় আনত হয়ে গেল।
মা লাফিয়ে উঠেন। “আশিষ ? তুই আশিষ কে বিয়ে করবি?

….. “আশিষ, আমার আশু তোর্ পছন্দ ?বল বল ! আমি এক্ষুণি পন্ডিত ডেকে দিন তারিখ পাকা করে ফেলি ।”

আমি জানি আশিষ এর আপত্তি নেই। এতো বছরে মানুষের মন, চোখের নজর পরখ করার বয়স আমার হয়েছে।

মাকে বললাম, “হাঁ মা, তোমার সঙ্গে সারাজীবন কাটানোর জন্য আমি আশিষ কেই বিয়ে করবো ।”
তাই তো পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে আমি দ্বিতীয় বার কনের সাজে বিয়ের পিঁড়িতে বসছি ।
সবাই আমাকে আশীর্বাদ করুন ।

ekhansangbad
Author: ekhansangbad

Related News