প্রদীপ কুমার সিংহ :- দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বারুইপুরে স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় একটি বড় ঝিল ছিল সেটি আস্তে আস্তে মজে গিয়ে পুকুরে পরিণত হয়েছে। যার জন্য ওই এলাকার মানুষ ওই পুকুরটি নাম দিয়েছিল কল পুকুর। এই জলাশয় বা কল পুকুর পরিস্কার করার নির্দেশ দিল উচ্চ আদালত।
বারুইপুর স্টেশনের চার নম্বর প্লাটফর্মের পাশে এই জলাশয়টিতে দীর্ঘদিন ধরে আবর্জনা ফেলা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। এর জেরে জলাশয়ের একাংশ প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট উচ্চ আদালতে জনস্বার্থ মামলা হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ দ্রুত জলাশয়টিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রেলকে।
আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে পুরসভা সহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে নিয়ে জলাশয়টি পরিদর্শন করে রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে। তার দু’মাসের মধ্যে জলাশয়টিকে ফিরিয়ে দিতে হবে আগের অবস্থায়।
এ ব্যাপারে বারুইপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান শক্তি রায় চৌধুরী বলেন হাইকোর্টে কল পুকুর নিয়ে যে রায় দিয়েছেন তা আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব।
বারুইপুরের ঐতিহ্যবাহী বিশাল এই জলাশয়টির বেহাল দশা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব স্থানীয় মানুষজন। কল পুকুর বাঁচাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের তৈরি একটি সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে লড়াইও চালিয়ে যাচ্ছে। রেল সহ বিভিন্ন দফতরে কল পুকুর সংস্কারের দাবি জানিয়েছে তারা। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি বলেই অভিযোগ। দিন কয়েক আগে ওই সংগঠনকে পুকুর সংস্কারের দায়িত্ব নিতে বলে রেল। কিন্তু অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কোনও দফতর পাশে দাঁড়ায়নি। ফলে সংগঠনের পক্ষে পুকুর সংস্কারের খরচের বোঝা সামলানো সম্ভব হয়নি।
উচ্চ আদালতের রায়ের পর সংগঠনের সদস্য কৌশিক মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঐতিহ্যবাহী এই জলা শয়টি দিনে দিনে শেষ হয়ে যাচ্ছিল। আদালতের রায়ের পর আশা করি এবার এটি পুরনো অবস্থায় ফিরবে।”
অভিযোগ, রেল ও পুরসভা দু’পক্ষের তরফেই ওই জলাশয়ে আবর্জনা ফেলা হতো। স্থানীয় প্রশাসনের মদতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জলাশয়ের একাংশ বুজিয়ে ফেলারও অভিযোগ ওঠে। বারুইপুরের পুরপ্রধান শক্তি রায়চৌধুরী অবশ্য বলেন, “পুরসভা ওখানে আবর্জনা ফেলেনি। ওটা রেলের জায়গা, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব রেলের। আদালত রেলকেই দায়িত্ব দিয়েছে।”
এ ব্যাপারে যারা জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন, তাদের অন্যতম আইনজীবী গৌতম সরদার বলেন, “দিন কয়েক আগে এই এলাকায় আরও একটি বুজে যাওয়া জলাশয় সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। আশা করি, কলপুকুরের ক্ষেত্রে সেরকম হবে না।”
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, “আদালতের নির্দেশ এলে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”