Select Language

[gtranslate]
৯ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার ২৫শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিবরাম হরি রাজগুরু-র জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলী ।

এ দেশের মুক্তিযুদ্ধ অগণিত বীরের আত্মদানগাথা। শিবরাম হরি রাজগুরু তাঁদেরই অন্যতম।ভারতের বোম্বাই প্রেসিডেন্সির অধুনা মহারাষ্ট্রের ভীমা নদীর তীরবর্তী খেদ নামক স্থানে এক মারাঠি ব্রাহ্মণ পরিবারে ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ২৪ আগস্ট রাজগুরু জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হরিনারায়ণ রাজগুরু এবং মা ছিলেন পার্বতী দেবী। মাত্র ছয় বৎসর বয়সে শিবরাম হরি রাজগুরুর পিতার মৃত্যু হয়।

ছাত্রাবস্থাতেই তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দিতে প্রস্তুত হন।চন্দ্রশেখর আজাদের জ্বালাময়ী বক্তৃতা শুনে যে কোন মূল্যে দেশকে ব্রিটিশ শাসন হতে মুক্ত করতে গঠিত হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট  রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হয় যান।

এখানেই ভগৎ সিং এবং সুখদেবের সাথে পরিচয় হয়। রাজগুরু, ভগৎ সিং, চন্দ্রশেখর আজাদ এবং জয়গোপাল মিলে ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ডিসেম্বর লাহোরে ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার জে পি স্যান্ডার্সের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটান। যদিও তাঁদের লক্ষ্য ছিলেন পুলিশ অফিসার জে.এ.স্কট,কিন্তু এই ঘটনায় স্যান্ডার্সের মৃত্যু হয়।

পাঞ্জাব কেশরী লালা লাজপত রাইর মৃত্যুর বদলা নিতে যান ভগত সিংহ, শিবরাম রাজগুরু, চন্দ্রশেখর আজাদরা। পুলিশের হাত এড়িয়ে পোস্টার দিয়ে বিপ্লবীরা জানিয়ে দেন লালার মৃত্যুর বদলা নেওয়া হয়েছে।

১৯২৯ সালের এপ্রিল মাসেই একে একে হিন্দুস্থান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান আর্মি-র বিপ্লবীরা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। পুলিশ অভিযোগ আনে, এই সহিংস স্বাধীনতা সংগ্রামীরাই স্যান্ডারস-কে হত্যা করেছেন।ব্রিটিশ আদালত ভগত সিংহ, শিবরাম রাজগুরু ও সুখদেব থাপারের ফাঁসির আদেশ দেয়। সারা দেশ এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে ওঠে। অনেকেই আশা করেছিলেন, মহাত্মা গান্ধি বিপ্লবীদের ফাঁসির হাত থেকে বাঁচাতে বড়সড় উদ্যোগ নেবেন। অনেকে মনে করেন, সহিংস বিপ্লব-বাদ সম্পর্কে অনীহার কারণেই গান্ধী এব্যাপারে তেমন সক্রিয় হননি।

আদালতে রায় অনুসারে ফাঁসির দিন ঠিক হয়েছিল ১৯৩১ সালের ২৪ মার্চ। কিন্তু সারা দেশব্যাপী বিক্ষোভের পরিস্থিতিতে নজিরবিহীন ভাবে ফাঁসির সময় এগিয়ে আনা হয়। দিনের বেলা ফাঁসি না হয়ে ভগত সিংহ, শিবরাম রাজগুরু ও সুখদেব-এর ফাঁসি হয় রাত্রে। ১৯৩১ সালের ২৩ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তিনজন বিপ্লবীর ফাঁসি হয়। মৃত্যুর সময় রাজগুরুর বয়স ছিল বাইশ বছর মাত্র। পাঞ্জাবের ফিরোজপুর জেলার শতদ্রু নদীর তীরে হুসেইনিওয়ালা গ্রামে তাঁদের মৃতদেহ চরম গোপনীয়তায় দাহ করা হয়।

রাজগুরু ওয়াদা পৈত্রিক বাড়ি যেখানে রাজগুরু যেখানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেই পৈতৃক বাড়ি রাজগুরু ওয়াদা নামে পরিচিত। ভীমা নদীর তীরে পুণা-নাসিক রোডে ২,৭৮৮ বর্গমিটারের জমির উপর এটি অবস্থিত এবং শিবরাম রাজগুরুর স্মৃতি হিসাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। স্থানীয় সংগঠন হুতাত্মা রাজগুরু স্মারক সমিতি ২০০৪ সাল থেকে প্রজাতন্ত্র দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে

স্বাধীন দেশে ক্ষমতায় বসলেন নেহরু-প্যাটেলরা। ইতিহাসও নীরবেই নিজেকে কিছুটা বদলে ফেলল। অহিংস আন্দোলনই স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল ধারা, বিপ্লবীরা কেবলই ব্যাতিক্রম, এমনই একটা ধারণা ক্রমেই ব্যাপ্ত হয়ে পড়ল। আমরা ব্যস্ত হয়ে থাকলাম রামমন্দির, বাবরি মসজিদ,অভিনেতার আত্মহত্যা আর নিত্য নতুন ঘটনা নিয়ে। বেসরকারি উদ্যোগে কোথাও কোথাও এই মহান বিপ্লবীর জন্মদিন পালিত হলেও সরকারি উদ্যোগ সে ভাবে চোখে পড়েনা।যা কাঙ্খিত নয়।এখন সংবাদ পরিবার দেশের এই মহান বিপ্লবীর আত্মত্যাগ কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরন করে।তাঁকে জানায় শতকোটি প্রণাম

ekhansangbad
Author: ekhansangbad

Related News