ইন্দ্রজিৎ আইচ :- জীবনের নানা ব্যস্ততায় সময়াঅভাবে আমরা অস্বাস্থ্যকর জলখাবার খেয়ে ফেলি, যা আমাদের সামগ্রিক ভাল থাকার উপরে, বিশেষ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপরে, প্রভাব ফেলে। এই সমস্যা নিয়ে কথা বলতে অ্যালমন্ড বোর্ড অফ ক্যালিফোর্নিয়া কলকাতার পার্ক হোটেলে ‘স্ন্যাক স্মার্ট ফর আ হেলদিয়ার ফ্যামিলি অ্যান্ড স্ট্রঙ্গার ইমিউনিটি’ শীর্ষক এক প্যানেল ডিসকাশনের আয়োজন করেছিল। বক্তাদের মধ্যে ছিলেন বলিউড এর জনপ্রিয় নায়িকা – অভিনেত্রী সোহা আলি খান, বিখ্যাত পাইলেটস মাস্টার ইনস্ট্রাকটর ইয়াসমিন করাচিওয়ালা এবং ঋতিকা সমাদ্দার, রিজিওনাল হেড অফ ডায়েটেটিক্স অ্যাট ম্যাক্স হেলথকেয়ার – নিউ দিল্লি। এই সেশনে স্বাস্থ্যকর জলখাবার খাওয়ার গুরুত্বের উপর, বিশেষ করে রোজকার খাওয়াদাওয়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং পরিবারের সুস্থতার জন্য অ্যালমন্ডের মত পুষ্টি গুণে সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার উপর, জোর দেওয়া হয়।
আলোচনা শুরু হয় স্বচ্ছ ও ভারসাম্যযুক্ত খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস তৈরি করার গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে, বিশেষ করে দ্রুত এবং সঙ্গে সঙ্গে খাওয়ার জন্যে তৈরি খাবারের প্রাচুর্য নিয়ে। বক্তারা স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা প্রোমোট করতে খাবারের মধ্যে মরশুমি ফল, শাকসবজি এবং অ্যালমন্ড যুক্ত করার সুপারিশ করেন। তাঁরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে অ্যালমন্ডের ভূমিকা তুলে ধরেন। কারণ এতে ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন, রাইবোফ্ল্যাভিন, জিঙ্ক, ভিটামিন B2 এবং ফসফরাসের মত আবশ্যিক পুষ্টি উপাদান থাকে।
অ্যালমন্ডে প্রচুর পরিমাণে তামা আর জিঙ্কও থাকে। এগুলোও আবশ্যিক পুষ্টি উপাদান যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার স্বাভাবিক কার্যকলাপে সাহায্য করে। ফলে সামগ্রিক স্বাস্থ্য তৈরি হয়। এই তথ্যসমৃদ্ধ সেশনে বক্তারা বিশেষ করে বলেন যে অ্যালমন্ডের এমন গুণ আছে যা দুবার খাওয়ার মাঝের সময়ে খিদে প্রশমিত করে ওজন কম রাখতে সাহায্য করে, অন্যদিকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সার্বিক সুস্থতা জোরদার করে।
বিখ্যাত পাইলেটস মাস্টার ইনস্ট্রাকটর ইয়াসমিন করাচিওয়ালা বলেন “একজন ফিটনেসে উৎসাহী মানুষ হিসাবে আমি সর্বদা সবাইকে স্বাস্থ্যকর জলখাবার খেতে বলি। বহুবছর ধরে আমি দেখছি মানুষের উপর স্বাস্থ্যকর জলখাবার খাওয়ার অসাধারণ প্রভাব পড়ে। প্রচুর প্রাকৃতিক আর স্বাস্থ্যকর জলখাবারের বিকল্প আছে। সবগুলোর মধ্যে অ্যালমন্ডস হল সেরা। প্রোটিন, ফাইবার আর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের মত জরুরি পুষ্টি উপাদানে ভরপুর অ্যালমন্ডস শরীরকে পুষ্টি দেয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় আর অসুখ-বিসুখ দূরে রাখতে সাহায্য করে। আমার জোরালো বিশ্বাস যে আপনার রোজকার খাওয়াদাওয়ায় এক মুঠো অ্যালমন্ড যোগ করা মানে স্রেফ একটা জলখাবার বেছে নেওয়া নয়; এটা সার্বিক সুস্থতার দিকে এক পা এগিয়ে যাওয়া। এছাড়া নিয়মিত শারীরিক কসরত করা একটা স্বাস্থ্যকর শরীর এবং মনের জন্যে জরুরি।”
বলিউড অভিনেত্রী সোহা আলি খান বলেন “আমার পরিবারের স্বাস্থ্য এবং সুখ নিশ্চিত করাকে আমি অগ্রাধিকার দিই। আমি যত্ন করে আমাদের মিলগুলো এবং জলখাবার ঠিক করি যাতে সেগুলো স্বাস্থ্যকর আর ভারসাম্যযুক্ত হয়। অ্যালমন্ড আমাদের খাওয়াদাওয়ায় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং বহুবছর ধরে আমি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় বুঝেছি যে অ্যালমন্ডসের প্রচুর পুষ্টি সংক্রান্ত এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গুণ আছে। আমি নিজে ব্যস্ত শুটিং বা মিটিংয়ের মধ্যে কাঁচা অ্যালমন্ড খেতে পছন্দ করি। তবে আমার মেয়ের জন্যে আমি এই বাদামগুলো ওর মিলে আর জলখাবারে দেওয়ার জন্যে নিত্যনতুন পদ্ধতি খুঁজতে ভালবাসি। ওর অ্যালমন্ডস খাওয়ার অন্যতম প্রিয় পদ্ধতি হল সকালের জলখাবারে বা স্যালাডের উপর অ্যালমন্ড ছড়িয়ে দেওয়া।”
ঋতিকা সমাদ্দার, রিজিওনাল হেড অফ ডায়েটেটিক্স অ্যাট ম্যাক্স হেলথকেয়ার – নিউ দিল্লি বললেন “ভেবেচিন্তে খাবার বাছাই করা যে কতটা জরুরি, বিশেষ করে জলখাবারের ব্যাপারে, তা নিয়ে কোনো কথাই যথেষ্ট নয়। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি ফল বা বাদামের মত পুষ্টিকর জলখাবার বেছে নেওয়া আমার নিজের জীবনে কতটা তফাত করে দেয়। বিশেষ করে অ্যালমন্ডস একটা স্থিতিশীল উদ্দীপনার উৎস হিসাবে কাজ করে, আমাকে সারাদিন একমনা এবং সক্রিয় রাখে। সার্বিক সুস্থতা এবং শরীরের রো গ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জোরদার করার ব্যাপারেও অ্যালমন্ডের অবদান আছে। অতএব এরপর আপনি যখন পুষ্টিকর জলখাবার খুঁজবেন, এক মুঠো অ্যালমন্ড খাওয়া যায় কিনা ভাববেন। দীর্ঘমেয়াদে আপনার শরীর আর মন আপনাকে এর জন্যে ধন্যবদ দেবে।”