চলমান ইতিহাসের সাক্ষ্মী তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি। রাজবাড়ীর ইট পাজরে গাঁথা রয়েছে সেই ইতিহাস। মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ থেকে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সংগ্রামী ইতিহাসের নানা পর্বের সঙ্গে যুক্ত ময়ূর রাজবংশের রাজপুরুষেরা। এক সময়ে স্বাধীনতা আন্দোলনের পীঠস্থান ছিল এই রাজবাড়ি। ইতিহাসবিদদের দাবি আনুমানিক প্রায় পাঁচ হাজার বছরে বহমান কালের নানা ইতিহাসের সাক্ষ্মী তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি। বর্তমানে ভগ্নপ্রায় রাজবাড়ীর আনুমানিক বয়স প্রায় চারশো বছরের কাছাকাছি। ২০০৪ সালে এই তাম্রলিপ্ত রাজবাড়িটি হেরিটেজ স্বীকৃতি লাভ করে। মধ্যযুগীয় ইন্দো ইসলামীয় স্থাপত্যের নিদর্শন তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি।
তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ীর এই উল্লেখযোগ্য ইতিহাস ক্রমশ ভুলতে বসেছে মানুষ। রাজবাড়ীর এই গৌরবময় ইতিহাস সাধারণের কাছে তুলে ধরতে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করল রাজবাড়ির সদস্য তথা আঞ্চলিক ইতিহাসবিদ এবং তাম্রলিপ্ত পৌরসভার চেয়ারম্যান দীপেন্দ্র নারায়ণ রায়।
আঞ্চলিক ইতিহাসবিদ, লেখক ডক্টর দীপেন্দ্রনারায়ন রায়ের লেখা ‘দি রয়েল স্টোরি অফ তাম্রলিপ্ত’ ও প্রাচীন তাম্রলিপ্তে বৌদ্ধ ভাবাদর্শনের উপর লেখা দুটি বই এর প্রকাশ হল কলকাতায়। তাম্রলিপ্ত রাজপরিবারের সদস্য ড. দীপেন্দ্রনারায়ন রায় সাহিত্য, আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চা করেন। লিখেছেন বেশ কয়েকটি বই। পেশাগতভাবে আইনজীবি ও বাণিজ্যে স্নাতকোত্তর হলেও রীতিমত সাহিত্য চর্চা করেন তিনি। স্বাধীনতা সংগ্রামে তাম্রলিপ্ত রাজপরিবারের ভূমিকা অপরিসীম। ধ্বংস প্রায় এই রাজবাড়িকে হেরিটেজ ঘোষনা করেছে সরকার। এই তাম্রলিপ্ত রাজ্য, বন্দর, প্রাচীন তাম্রলিপ্তের ইতিহাস নিয়ে বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন তিনি। সেগুলির উপর ভিত্তি করে ড.দীপেন্দ্রনারায়ন রায়, রাজীব শ্রাবণ, শুভ্রাংশু জানার লেখা ‘দি রয়েল স্টোরি অফ তাম্রলিপ্ত’ ও ‘তাম্রলিপ্ত: এ সিটডল অফ বৌদ্ধ ধর্ম’ বই দুটি প্রকাশ হল। লেখকরা বলেছেন প্রাচীন তাম্রলিপ্তের অনেক অজানা তথ্য রয়েছে বই দুটিতে। যারা গবেষনা করছেন বা ইতিহাস নিয়ে চর্চা করেন তাদের কাজে লাগবে এই তথ্যগুলি।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইতিহাসবিদ তপতী গুহ ঠাকুরতা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড: কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, তাম্রলিপ্ত রাজ পরিবারের সদস্যা নন্দিনী রায়, সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।