Select Language

[gtranslate]
৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ভারতীয় সংগীত জগতের সাধক কবীর বিসমিল্লাহ খানকে শ্রদ্ধাঞ্জলী।

১৯৪৭ সালের ১৫ আগষ্ট বিসমিল্লাহ খান ও তাঁর সহযোগীরা রাগ কাফির মাধ্যমে স্বাধীনতার সকালে স্বাগত জানান দেশবাসীকে।

১৯১৬ সালের ২১ মার্চ বিহারের বক্সার জেলার ডুমরাও গ্রামে বিসমিল্লা খান জন্মগ্রহণ করেন। বাবা পয়গম্বর খান ও মা মিঠানের দ্বিতীয় সন্তান ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান সাহেবকে প্রথমে কামরুদ্দিন বলে ডাকা হত।কিন্তু তাঁর পিতামহ জন্মের পর নবজাতককে দেখে বিসমিল্লাহ বলার পর হতে তাঁর নাম হয়ে যায় বিসমিল্লাহ খান।ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান সাহেবের পূর্বপুরুষেরা বিহারের ডুমরাও রাজ্যের রাজ সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন। ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খানের সঙ্গীত গুরু ছিলেন প্রয়াত আলী বকস্ বিলায়াতু। তিনি ছিলেন বারাণসীর বিশ্বনাথ মন্দিরের সানাই বাদক ছিলেন।

ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান সাহেব ছিলেন একজন ধার্মিক সুন্নি মুসলমান।

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা উদ্‌যাপন ছাড়াও তিনি প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবস ২৬ জানুয়ারি, ১৯৫০ সালে লালকেল্লার প্রাচীর থেকে সানাই পরিবেশন করেছিলেন। সেই তখন থেকেই ওস্তাদের সানাই প্রতিবছর ভারতের স্বাধীনতা দিবসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের একটি অংশে পরিণত হয়েছিল।কথিত আছে যে, তিনি তাঁর সানাইকে ‘বেগম’ বলে ডাকতেন।যেখানে তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ‘বেগম’ সানাইয়ের প্রেমে পড়েছিলেন।

তিনি ছিলেন পাঁচবারের নামাযি, যিনি সংগীতকে ঈশ্বরের সাধনা হিসাবে বিবেচনা করতেন। যাঁর সানাইয়ের প্রতিধ্বনি দিয়ে বাবা বিশ্বনাথ মন্দিরের দরজা খোলা হত। তিনি এমনই এক বানারসি ছিলেন যিনি গঙ্গায় নামাযের উপাসনা করতেন এবং সরস্বতীর স্মরণ করতেন।তিনি ভারতীয় সংগীত জগতের সাধক কবীর, যাঁর জন্য মন্দির-মসজিদ এবং হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে পার্থক্য মুছে ফেলা হয়েছিল।

সারা পৃথিবী তাঁর সানাইয়ের সুরে মুগ্ধ। আফগানিস্তান, ইউরোপ, ইরান, ইরাক, কানাডা, আফ্রিকা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত, চিন, জাপান-সহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশের সব শহরেই গুঞ্জন ছড়িয়েছে বিসমিল্লার সানাই-সঙ্গীত।

উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পীদের মধ্যে তিনিই তৃতীয় যিনি ভারতরত্ন পেয়েছেন। এবং তিনিই সেই অল্পসংখ্যক গুণীদের একজন যিনি ভারতের চারটি সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মানেই সম্মানিত অর্থাৎ পদ্মশ্রী , পদ্মভূষণ , পদ্মবিভূষণ , এবং ভারতরত্ন। এছাড়া পেয়েছেন সঙ্গীত নাটক একাডেমি। পেয়েছেন তানসেন পুরস্কার। সঙ্গীত নাটক একাডেমির ফেলোও হয়েছেন ১৯৯৪  সালে।

ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান হলেন ভারতীয় ধ্রুপদি সংগীতের এমন এক ব্যক্তিত্ব, যিনি বেনারসের লোক সুরকে শাস্ত্রীয় সংগীতের সঙ্গে মিশ্রিত করেন। তাঁর সানাইয়ের স্বর তরঙ্গের সঙ্গে গঙ্গার ধাপ পেরিয়ে মন্দিরের নহবতখানা ছুঁয়ে দেশের সীমানা পার করে বিশ্বজুড়ে এই বাদ্যকে অমর করে তুলেছে।

আজ, ২১ অগস্ট তাঁর মৃত্যুদিন। সানাইয়ের সুরের কারুণ্যের সঙ্গে সানাই-সম্রাটের মৃত্যুদিনের শূন্যতা ও বেদনাময়তা কোথায় যেন এক সঙ্গে বাঁধা পড়ে যায়।এখন সংবাদ পরিবার ভারতের উচ্চাঙ্গ শাস্ত্রীয় সঙ্গীত জগতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতজ্ঞকে জানায় শতকোটি প্রণাম

ekhansangbad
Author: ekhansangbad

Related News

Also Read