Select Language

[gtranslate]
১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত ভারতীয় নৃতত্ত্ববিদ ভেরিয়ার এলউইনকে জন্মদিবসে শুভেচ্ছা।।

হ্যারি ভেরিয়ার হলম্যান এলউইনের জন্ম ১৯০২ খ্রিস্টাব্দের ২৯ আগস্টের খুব ভোরে ইংল্যান্ডের কেন্ট ডোভারের অত্যন্ত ধার্মিক এক এভাঞ্জেলিক পরিবারে।তিনি খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারক হিসাবে ভারতে আসেন, কিন্তু যাজকের কর্ম পরিত্যাগ করে ভারতীয় জাতীয়তাবাদে যুক্ত হয়ে যান। মহাত্মা গান্ধী এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে কাজে প্রথমে মহাত্মা গান্ধীর সাবরমতী আশ্রমে থাকতে শুরু করেন এবং পরে ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হন।

ভেরিয়ার প্রথমে অক্সফোর্ডের ডিন ক্লোজ স্কুলে এবং পরে মের্টন কলেজে থেকে ইংরাজী ভাষা ও সাহিত্যে প্রথম শ্রেণীতে বি.এ, এম.এ এবং ডিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন।তিনি ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে অক্সফোর্ড ইন্টার-কলেজিয়েট খ্রিস্টান ইউনিয়নের (ওআইসিসিইউ) সভাপতিও ছিলেন। অক্সফোর্ডে তার শিক্ষাজীবন ছিল অত্যন্ত উজ্জ্বল। তিনি ইংরাজী ও থিওলজি দুটি বিষয়েই প্রথম হয়েছিলেন। এরপর তিনি চার্চ অফ ইংল্যান্ডের যাজক নিযুক্ত হন।

১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে  ধর্মপ্রচারক হিসেবে ভারতে আসেন। তিনি প্রথমে পুনেতে খ্রিস্টান সার্ভিস সোসাইটিতে যোগ দেন। প্রথমবার তিনি মধ্য ভারতের বিভিন্ন স্থান- বর্তমানের  মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং পূর্ব মহারাষ্ট্রের কিছু অংশ পরিদর্শন করেন এবং তার সঙ্গে ছিলেন পুনের শামরাও হিভাল। কিন্তু শুরু থেকেই তার জীবন মহাত্মা গান্ধী এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দর্শনে প্রভাবিত হয়েছিল। তিনি ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত করেন। মহাত্মা গান্ধীর পুত্রসম স্নেহ লাভ করেন।ভারতীয় জাতীয়তাবাদের অনুসারী হয়ে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সমর্থক হন। 

ভারতের আদিবাসী তথা উপজাতিদের উপর ভেরিয়ার এলউইনের জীবনভর পরিশ্রমের নৃতাত্ত্বিক গবেষণা প্রকৃত পক্ষে বিরল এবং প্রামান্য নথি হিসাবে বিবেচিত হয়।ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে তিনি যেমন সক্রিয় ছিলেন, স্বাধীনোত্তর সময়ে পণ্ডিত নেহরুর ইচ্ছায় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসকারী উপজাতি জনগণের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার এজেন্সির মাধ্যমে সচেষ্ট ছিলেন।তিনি ভারতের বিভিন্ন উপজাতি গোষ্ঠী উপর অসংখ্য কাজ করেছেন তার মধ্যে মারিয়া এবং বাইগাদের বিষয়গুলি অত্যন্ত প্রশংসনীয়।মান্ডলা জেলার জঙ্গলময় প্রত্যন্ত গ্রামে ২০ বছর গোণ্ড উপজাতির মাঝে অতিবাহিত করেন।বস্তারে আদিবাসীদের সঙ্গে বসবাস কালে সঙ্গী হিসাবে পেয়েছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি ফটো সাংবাদিক সুনীল জানাকে। যৌথপ্রয়াসে তুলেছিলেন আদিবাসীগোষ্ঠীর সুন্দর সুন্দর ছবি।যার ফলে ভারতের আদিবসী তথা উপজাতিদের উপর ভেরিয়ার এলউইনের জীবনভর পরিশ্রমের নৃতাত্ত্বিক গবেষণা প্রকৃত পক্ষে বিরল এবং প্রামান্য নথি হিসাবে বিবেচিত হয়। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম বিদেশী যিনি ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। সেবছরেই তিনি ভারত সরকারের নৃতাত্ত্বিক উপদেষ্টা নিযুক্ত হন। ভেরিয়ার এলউইন ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের ২২ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে দিল্লিতে মারা যান।বৌদ্ধ রীতি অনুসারে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয় এবং চিতাভস্ম অরুণাচল প্রদেশের সিয়াং নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়।

ভারতপ্রেমিক হিসাবে ভেরিয়ার এলউইন অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে অগণিত পদক ও পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ প্রদান করেন।

ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত ভারতীয় নৃতত্ত্ববিদ, নৃতাত্ত্বিক এবং  উপজাতীয় কর্মী হ্যারি ভেরিয়ার হলম্যান এলউইনকে কুর্নিশ জানায় এখন সংবাদ পরিবার

ekhansangbad
Author: ekhansangbad

Related News

Also Read