ইন্দ্রজিৎ আইচ :- বাংলার সংস্কৃতি জগতের দুই জনপ্রিয় শিল্পী হলেন প্রণতি ঠাকুর ও দেবশংকর হালদার । এই প্রথমবার আবৃত্তিকার প্রণতি ঠাকুরের সংস্থা সূর্যাবর্ত র আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো এক অসাধারণ শ্রুতি নাটকের সন্ধ্যা
প্রণতি ঠাকুর বিগত চার দশকের বেশি সময় ধরে বাচিক শিল্প ও শ্রুতি নাটক নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন । বাচিক শিল্পে তৈরি করেছেন একান্ত নিজস্ব এক ঘরানা আর তৈরি করেছেন অসংখ্য ছাত্রছাত্রী। তার নিজন্থ প্রতিষ্ঠান “ সূর্যাবর্ত” ।
এদিন সন্ধায় সম্মাননা জানানো হয় সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত সাহিত্যিক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাকে সংবর্ধনা ও সম্মান জানান সূর্যাবর্তর সভাপতি স্বনামধন্য চিকিৎসক তথা শিশু সাহিতাক ডাঃ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়।
তারা দুজনেই দু এক কথা বলেন প্রণতি ঠাকুর সম্পর্কে এবং সংস্থা
সম্পর্কে।
এদিনের অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছিল মুলত শ্রুতি নাটক দিয়ে । প্রণতি ঠাকুরের ২২ জন ছাত্রছাত্রী অংশ নেন তিনটে শ্রুতি নাটকে।পরপর পরিবেশিত হয়
(১) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প অবলম্বনে “ শেষ আশীর্বাদ”
নাট্যকার – স্বপন গঙ্গোপাধ্যায়,
অভিনয়ে ছিলেন শ্রীপর্ণা ও ইন্দ্রাণী।
(২) “ হুমকি “
নাট্যকার – অনির্বাণ মুখোপাধ্যায়
অভিনয়ে ছিলেন বাসবী, মধুমিতা, ক্ষমা , ঐশী |
(৩) “ পীর বদরের প্লান চেট”
নাট্যকার – শুভাশিস ঘোষ ঠাকুর
অভিনয়ে ছিলেন মৌসুমী , রীনা জয়িতা | এরপর মঞ্চস্থ হয়
মঙ্গলকাব্য অবলম্বনে “ কালো মাসের ফুল্লরা কথা”
সংকলন ও রচনা –আকাশ দত্ত
অভিনয়ে ছিলেন প্রজ্ঞা , জুঁই , ব্রততী , অনন্যা , সায়ন্তী , দীপিকা, মৌমিতা ও শাশ্বতী।
এই শ্রুতি নাটক গুলির মাঝে ছিল বাংলা ভাষা নিয়ে সমবেত আবৃত্তি – “ আমার দুঃখিনী বর্ণমালা “। তাতে অংশ গ্রহন করেন জলি, বিপাশা , সোমা , শ্রীজিতা, রাখী।
অনুষ্ঠানের শেষ ভাগ ছিল দারুন আকর্ষণীয় । প্রণতি ঠাকুর একক পরিবেশন করেন “ভানুমতী’।
ভানুমতী হলেন ভারতীয় মহাকাব্য মহাভারতের একটি চরিত্র। তিনি হলেন দূর্যোধন, প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যক্তি এবং কালি (দৈত্য) এর একজন অবতার। তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন প্রণতি ঠাকুর তার অভিনয়ের মাধ্যমে। পাশাপাশি
দেবশংকর হালদারও স্বভাব সিদ্ধ ভঙ্গীতে একক পরিবেশন করেন। তা দর্শকদের মুগ্ধ করে।
তবে এদিনের সেরা আকর্ষণ ছিল প্রণতি ঠাকুর ও দেবশংকর হালদারের দ্বৈত পরিবেশনায় শ্রতি অভিনয় _” নর্তকী ও বীণাবাদক” । নাটককার বীরেন্দ্র কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। নর্তকীর ভূমিকায় কণ্ঠ দেন প্রণতি ঠাকুর আর বীণাবাদকের ভূমিকায় দেবশংকর হালদার। দুজনের যুগলবন্দী অপূর্ব।
এদিনের অনুষ্ঠানের ভাবনা, বিন্যাস ও নির্দেশনা ছিল প্রণতি ঠাকুর নিজের। পুরো অনুষ্ঠান টিকে সুন্দর ভাবে সাজিয়েছেন ।
আজকের অনুস্থানের মঞ্চসজ্জায় ছিলেন তরণকান্তি বারিক , আলোক সজ্জা্য – দীপঙ্কর দে, রূপসজ্জায় – সায়ন্তনী, আবহে- শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি এক কথায় অনবদ্য হয়ে ওঠে।
সঞ্চালনায় ছিলেন স্বর্ণাভ রায়।
অনেকদিন বাদে শিশির মঞ্চে হল ভর্তি দর্শক উপভোগ করলেন এক চমৎকার আবৃত্তি ও শ্রুতি নাটকের সন্ধ্যা।