পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট ও শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লক এলাকার জমা দূষিত জল দ্রুত বের করা সহ আগামী বর্ষার পূর্বে সোয়াদিঘী খাল পূর্ন সংস্কারের বিষয়ে জেলা প্রশাসন এখনো কোন সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বন্যা-ভাঙন প্রতিরোধ কমিটি অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী,মুখ্যসচিব,সেচমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিল।
আগামী ১৬ অক্টোবর কোলাঘাট বি ডি ও অফিসে গনডেপুটেশন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। আজ এক প্রেস বিবৃতিতে একথা জানান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বর্ষার জমা দূষিত জল দ্রুত বের করা সহ সোয়াদিঘী খাল পূর্নাঙ্গ সংস্কারের দাবীতে ১২ অক্টোবর জলবন্দী এলাকার প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষজন ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। অবশেষে শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বিডিও অমিত কুমার গায়েন অবরোধস্থলে উপস্থিত হয়ে ১৩ অক্টোবর মহকুমা শাসক, কোলাঘাট ব্লকের বিডিও, সেচ দপ্তরের এস ডি ও কে নিয়ে বৈঠক করে জমা জল দ্রুত বের করার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
সেইমত গতকাল শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লক অফিসে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিডিও ছাড়াও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি,সেচ দপ্তরের তমলুক সেকসানের এস.ও. এবং আন্দোলনকারীদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বন্যা-ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক,সোয়াদিঘী খাল সংস্কার সমিতির সম্পাদক মধুসূদন বেরা, অশোক মাইতি, প্রশান্ত সামন্ত প্রমুখ। উক্ত সভায় সেচ দপ্তর অর্থের সংকটের কারনে এখনই আশু কিছু কাজ করতে পারছে না বলে জানালে সবাই তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেন।
এই পরিপ্রেক্ষিতে উপরোক্ত কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে নারায়ণবাবু মন্তব্য করেন। পূজোর পূর্বে জলবন্দী এলাকার জনজীবন স্বাভাবিক করতে খালের ভেতরে থাকা কচুরিপানা সহ জঞ্জাল পরিস্কার করা না হলে কমিটি আবারও বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে বলে উনি জানান।
আরো উল্লেখ্য, তমলুক মহকুমার গুরুত্বপূর্ণ নিকাশী খাল হোল-সোয়াদিঘী খাল। ২২ কিমি দীর্ঘ এই খালটি কোলাঘাট ব্লকের নারায়ন পাকুড়িয়া থেকে বেরিয়ে ভোগপুর ও দেড়িয়াচক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা হয়ে শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লকের সোয়াদিঘীতে পড়েছে। খালটি দিয়ে প্রায় শতাধিক মৌজার নিকাশী জল রূপনারায়নে বের হয়। খালটি যেখানে রূপনারায়নে পড়েছে, বছর কয়েক পূর্বে সেখানে নদীর ভেতরে বেআইনী মাছের ঝিল তৈরী হয়েছে। এহেন গুরুত্বপূর্ন খালটি দীর্ঘদিন পূর্ণ সংস্কার না হওয়ায় সাম্প্রতিক নিম্নচাপজনিত বর্ষনে পাঁশকুড়া স্টেশন বাজার সহ কোলাঘাট ব্লকের দেড়িয়াচক,ভোগপুর,সাগরবাড় এবং শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বল্লুক-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকা আজো জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। ফলস্বরূপ এলাকার রাস্তা সহ আমনধান-ফুল-পানবরোজ-সব্জী-মাছচাষ ভীষণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বর্তমানে ওই জমা জল দূষিত হয়ে গ্রামগুলিতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সাপের উপদ্রব বাড়ছে।
বাসিন্দাদের বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে খালের নিম্নাংশে জলনিকাশীতে বাধাসৃষ্টিকারী আবর্জনা ও জঞ্জাল,বনসৃজনের পড়ে থাকা গাছ সহ মজে যাওয়া অংশের খানিকটা মাটি জেসিবি মেসিন দিয়ে পরিষ্কার করলে জমা জল অনেকটা দ্রুততার সাথে বেরোবে।