প্রদীপ কুমার সিংহ :- দুদিন ব্যাপী মোয়া উৎসবের সূচনা হল শনিবার সন্ধ্যায়। এই মোয়া উৎসব চলে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত।দক্ষিন ২৪ পরগনার জয়নগর ১ ব্লকের দক্ষিন বারাসাত শিবদাস আচার্য্য স্কুল প্রাঙ্গনে এই মোয়া উৎসবের সূচনা করেন জয়নগরের বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস। এছাড়াও এই উৎসবের অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান সুকুমার হালদার, জয়নগর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, বিডিও সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। নানা স্বাদের নানা ধরনের জয়নগরের মোয়া, নলেন গুড় থেকে শুরু করে পাটালির সম্ভার ও নানা ধরনের শীতকালীন মিষ্টির সম্ভার রয়েছে এই মোয়া উৎসবে। বারুইপুর প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত এই উৎসব এবার দ্বিতীয় বর্ষে পদার্পণ করল।
শীতে ভোজন রসিক বাঙালির অন্যতম আকর্ষণ জয়নগরের মোয়া। কনকচূড় ধানের খই ও নলেনগুড়ের মিশ্রণে তৈরি হয় এই অসাধারণ শীতকালীন মিষ্টি। সীতা ভোগ মিহিদানা যদি হয় বর্ধমান জেলার সেরা মিষ্টি, তেমনি দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলার সেরা মিষ্টি এই জয়নগরের মোয়া। শুধু রাজ্য নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এমনকি বিদেশেও এই মোয়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখেই এই মোয়া বর্তমানে মিলছে অনলাইনেও। তাছাড়া যারা ডায়বেটিক রোগে আক্রান্ত সেই সমস্ত মানুষদের কথা মাথায় রেখে নো এডেড সুগার মোয়াও এবার মিলছে এই মোয়া উৎসবে।
তবে মোয়ার আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা থাকলেও এই মোয়া শিল্প ধিরে ধিরে শেষ হয়ে যেতে বসেছে। কারণ একদিকে যেমন কমছে খেজুর গাছের সংখ্যা, তেমনি বর্তমান প্রজন্ম শিউলির পেশায় আসতে চাইছেন না ফলে গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও তা থেকে সুমিষ্ট নলেন গুড় তৈরি করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাই এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে নতুন করে খেজুর গাছ তৈরি করা এবং বর্তমান প্রজন্মকে এই শিউলির কাজে উৎসাহিত করে এই পেশায় উদ্বুদ্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে বারুইপুর প্রেস ক্লাব। সেই চিন্তাধারায় দুদিনের এই মোয়া উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। উৎসব প্রাঙ্গনে মানুষের ঢল নেমেছে ছিল। স্টলে ঘুরে ঘুরে মোয়া চেখে দেখে কেনাকাটাও শুরু করেছেন মানুষজন। সব মিলিয়ে জমে উঠেছে মোয়া উৎসব।
রবিবারও বিশিষ্ট মানুষরা আসে এবং তাদের মোমেন্ট ও শাল দিয়ে ও সংবর্ধনা করা হয় বারইপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে।
দুদিন ব্যাপী এই মহা উৎসবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বারাসাতের জমজমাট আকার ধারণ করে।