পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির নিকটবর্তী জুনপুটে মিসাইল উৎক্ষেপণ কেন্দ্র স্থাপন করে জুনপুটকে সামরিক ঘাঁটি বানিয়ে হাজার হাজার মৎস্যজীবী এবং সাধারণ মানুষকে উচ্ছেদ করার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আজ এক নাগরিক সভা অনুষ্ঠিত হল কাঁথি শহরের ‘চারুভিলা’তে। বিজ্ঞান সংগঠন কন্টাই সায়েন্স সেন্টারের উদ্যোগে এই সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রাক্তণ শিক্ষক অসিত বরন প্রামানিক।
এই সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সর্বভারতীয় বিজ্ঞান সংগঠন ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটির সর্বভারতীয় সভাপতি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশানাল সায়েন্স একাডেমি’র সদস্য অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড: দেবব্রত বেরা এবং ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক অধ্যাপক তপন শী। বক্তারা জুনপুটে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র স্থাপনের নানান বিপদের দিক তুলে ধরে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এই কনভেনশনে জুনপুট ও হরিপুরের এলাকার জনসাধারণসহ কাঁথি শহরের নাগরিকবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন কাঁথি মহকুমা খটি মৎসজীবী ইউনিয়নের সম্পাদক দেবব্রত খুঁটিয়া, কন্টাই সায়েন্স সেন্টারের অন্যতম সদস্য, এই কনভেনশনের আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ রায় জানান, “জুনপুটে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ঘাঁটি করার মধ্য দিয়ে হাজার হাজার মৎস্যজীবী এবং জনসাধারণকে জীবন জীবিকা থেকে উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা শুধু নয়, খুব দ্রুত ওই এলাকা মিলিটারীর দখলে চলে আসবে এবং হরিপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প সহজে রূপায়িত হবে। আর এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প রূপয়িত হলে হরিপুর থেকে পাঁচ কিলোমিটার বৃত্তের বাফার জনের হাজার হাজার মানুষকে উচ্ছেদ হতে হবে। শুধু তাই নয়, তেজস্ক্রিয় দূষণে সমগ্র কাঁথিবাসী আক্রান্ত হবে। সুতরাং আমরা জুনপুটে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ঘাঁটি এবং হরিপুরে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের জনসাধারণকে আন্দোলনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।” এই কনভেনশন থেকে আগামী দিনে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার অঙ্গীকার গৃহীত হয়েছে– ‘হাজার হাজার মানুষকে উচ্ছেদ করে এই প্রকল্প স্থাপন করা চলবে না। প্রতিরক্ষার সেন্টিমেন্ট জাগিয়ে হাজার হাজার মানুষকে জীবন জীবিকা থেকে উচ্ছেদ করার এই চক্রান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।”