জুনপুট, হরিপুর ইত্যাদি এলাকায় মিসাইল উৎক্ষেপণ কেন্দ্র গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু মিসাইলের আড়ালে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনাও আছে। দেশের সুরক্ষার জন্য মিসাইল ক্ষেত্র গড়ে উঠুক কিন্তু মানুষের জীবন জীবিকাকে বিপন্ন করে দেশের সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনার বিরোধিতা করবো। এই কথাগুলো রবিবার জুনপুটে প্রতিবাদ সভায় বলেন মৎস্যজীবী নেতা তথা কাঁথি -২ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা আমিন সোহেল।
মৎস্যজীবীদের জীবন জীবিকার রক্ষার দাবিতে ডিআরডিওর ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র গড়ার প্রতিবাদে প্রতিবাদ সভা সংগঠিত হলো পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জুনপুট মৎস্য খটি প্রাঙ্গণে। এই সভায় উপস্থিত থেকে আমিন সোহেল বলেন এই ঐতিহ্যবাহী জুনপুট মৎস্য খটিতে আমার বাবা, দাদু ও তার বাবা এখানে মাছ ধরার কাজ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করেছেন। আমরা মৎস্যজীবী পরিবারের লোক। মৎস্যজীবীদের স্বার্থ রক্ষায় জীবন দিতে পারি। আপনারা নেটে দেখতে পারেন পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র চুক্তি বাতিল হয়নি। নেটে দেখাচ্ছে ওটা স্থগিত আছে। যে কোন মুহূর্তে এই পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র গোড়ার কাজ করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। সেইভাবে ২০১৪ সাল থেকে এই পরিকল্পনা চলছে। এখানে মিসাইল উৎক্ষেপণ কেন্দ্র গড়ে উঠলে মৎস্যজীবীদের অবাদ যাতাযাত বন্ধ হয়ে যাবে। যারা প্রথমে বলছে ৫০০ মিটার, তারপর বলবে এক কিলোমিটার, তিন কিলোমিটার, ৫ কিলোমিটার, পরে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত জায়গা নেবে। এই কাজ শুরু হলে তখন আর আমাদের বন্ধ করার মতন কোন উপায় থাকবেনা। এখানে হাজার হাজার মৎস্যজীবী কৃষক বসবাস করে। তাদের জীবন জীবিকার স্বার্থে এখানে মিসাইল ক্ষেত্র গড়তে দেওয়া যাবে না। দেশের সুরক্ষার স্বার্থে মিসাইল ক্ষেত্র গড়ে উঠুক আপত্তি নেই। কিন্তু জনবহুল এলাকায় নয়। যেখানে জনবসতি নেই সেখানেই এই কেন্দ্র গড়ে উঠুক তাতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। এই সভার উপস্থিত মাজিলাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান প্রদীপ কুন্ডু বলেন মৎস্যজীবীদের জীবন জীবিকার রক্ষা করতে হবে। এই ঘনবসতি এলাকায় উৎক্ষেপণ কেন্দ্র করা যাবে না। তার জন্য মৎস্যজীবীদের সংগঠিতভাবে আন্দোলনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন এটি অরাজনৈতিক জীবন জীবিকার স্বার্থে আন্দোলন। জাতি বর্ণ ধর্ম রাজনীতির উর্ধ্বে এই আন্দোলন করতে হবে। এই আন্দোলনের পাশে আমরা সকলেই আছি থাকবো। জুনপুট ভূমি রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে এই প্রতিবাদ সভার রবিবার বিকালে আয়োজন করা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন দিপু পট্টনায়ক, পঞ্চায়েত সদস্য নিতাই ঘোড়াই, পঞ্চায়েত প্রধান প্রদীপ কুন্ডু নজরুল আলী, জাহিদ আলী, সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। অবশেষে একটি ভূমি আন্দোলনের বলিষ্ঠ ভূমি রক্ষা কমিটি গঠন করা হয়।