প্রকৃতির দক্ষিন বাতায়নে বইতে শুরু করেছে ফাগুন হাওয়া। কোকিলের কুহুতান আর কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়ায় ভ্রমরের গুনগুন শব্দে আগমন ঘটেছে ঋতুরাজ বসন্তের। খেজুরীর নবধারার আয়োজনে সেই বসন্ত বন্দনায় মুখরিত হলো সুভাষচন্দ্র বসু বিএড কলেজের প্রাঙ্গন। গাঁদা ফুলের মালা, হলুদ শাড়ি পরে ছোট থেকে বড়রা “ওরে গৃহবাসী”এই গানের সঙ্গে শুরু করে নগর পরিক্রমা। তারপর কলেজের সুদৃশ্য ফুলবাগানে সারিবদ্ধ হয়ে খুদে শিল্পীরা পরিবেশন করে রবি ঠাকুরের গান ও নাচ। মূল মঞ্চে পলাশ এবং আবির দিয়ে অতিথিবরণ। সমীর ডান্স অ্যাকাডেমির কচিকাঁচা থেকে শুরু করে অভিভাবকরাও নাচ, গান ও কবিতায় মেতে উঠে।
রবীন্দ্র সংগীত, লোকসংগীত, আধুনিক গান থেকে শুরু করে রবীন্দ্র নৃত্য, প্রচলিত লোকনৃত্য সহ শাস্ত্রীয় নৃত্য পরিবেশন করে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিল্পীরা। সাংস্কৃতিক জগতের গুণী অতিথিবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন – সাহিত্যিক গবেষক ড. বিষ্ণুপদ জানা, কবি বিমান কুমার নায়ক, কবি সমরেশ সুবোধ পড়িয়া, নাট্টকার ধীরেন্দ্রনাথ প্রধান, প্রাবন্ধিক-কবি মহামায়া গোল, কবি সোমা প্রধান হাজরা, শিক্ষিকা সমাদৃতা মাইতি, মুক্ত কোকিলকন্ঠী গায়িকা সহেলী মাইতি, বিশিষ্ট ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠক উত্তমকুমার গুড়্যা, কমলাকান্ত পাল, সাংবাদিক শুভেন্দু কামিলা ও শিক্ষক প্রীতম সামন্ত প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ এবং তিন শতাধিক ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও অভিভাবিকাগণ৷ সকল অতিথিবৃন্দ নবধারার এই অভিনব প্রয়াসকে সাধুবাদ জানান এবং উপস্থিত সবাইকে হোলি ও বসন্ত উৎসবের শুভেচ্ছা অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন৷
সমীর ড্যান্স একাডেমীর শিক্ষিকা মধুরিমা, প্রেরণা, সঞ্চিতা, মন্দিরা, অনন্যা, মধুশ্রী সহ অন্যান্য নৃত্য শিল্পীরা চিত্রাঙ্গদার বিশেষ অংশে নৃত্য পরিবেশন করে সবার মন জয় করে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সোমা প্রধান, সমাদৃতা মাইতি, ড. বিষ্ণুপদ জানা ও সমীর পন্ডা। অনুষ্ঠান মঞ্চকে শৈল্পিক চিন্তাভাবনায় সাজিয়ে তোলেন উত্তম গুড়িয়া ও কমলাকান্ত পাল। অনুষ্ঠানে ভেষজ আবির ব্যবহার করা হয় এবং সেই ভেষজ আবির খেলার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। নবধারার তরফ থেকে রুদ্র পন্ডা ও সমীর পন্ডা জানান এই বসন্ত উৎসবকে কেন্দ্র করে এলাকায় এক সাংস্কৃতিক জাগরণের উন্মেষ হয়। সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চার ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এইরকম বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মসূচির পরিকল্পনা আগামীদিনেও নবধারার প্রয়াস থাকবে।