মাছে ভাতে বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় মাছ ইলিশ। ইলিশের নাম গন্ধ ও স্বাদের ভোজন রসিক বাঙালির দুর্বলতা নতুন করে বলার নয়। এতদিন ইলিশ মাছের জন্য আবওহাওয়া এবং নদী-সমুদ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হত। এবার সেই দিন শেষ। এবার ইলিশের উৎপাদন হবে আবদ্ধ পুকুরে।
আর বর্ষাকালের অপেক্ষা নয়। সব ঋতুতেই পাওয়া যাবে ইলিশ। আইসিএআর-সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিসারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে আবদ্ধ জলে ইলিশ মাছের চাষ। আর তাতেই আশানুরূপ সফল হয়েছে। এক একটি ইলিশের ওজন হয়েছে প্রায় ৭০০ গ্রাম। ইলিশ মাছ নিয়ে মৎস্য বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিনের গবেষণা অবশেষে সফল হল।
গবেষণা চালিয়ে রীতিমতো সফল হলেন মৎস্য বিজ্ঞানীরা। কোলাঘাট ব্লকের জামিট্যা এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে ইলিশ মাছ চাষ শুরু করে সিফরি। আর তাতেই মিলেছে অভাবনীয় সফলতা। পুকুর ইলিশ মাছের খাদ্য হিসাবে জু প্লাংটন ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে প্রিয় মাছ ইলিশের জন্য ভোজন রসিক বাঙালিদের আর বর্ষাকালের অপেক্ষা করতে হবে না, যে কোনও ঋতুতে পুকুর থেকেই পাওয়া যাবে ইলিশ মাছ।
কেন্দ্রীয় মৎস্য গবেষণা সংস্থার দাবি, পুকুরের জলের ইলিশ মাছ চাষ ও মাছের প্রজনন ঘটানো অনেকটাই সফল। ইলিশ মাছ অত্যন্ত ধীরে ধীরে বড় হয়। ফলে সময় লাগে। সেই জায়গায় পুকুরের ইলিশ প্রায় তিন বছরের মধ্যেই ভালো বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়কালে সমুদ্র এবং নদীতেও একটি ইলিশের ওজন এত গ্রাম হয় না। তাই ইলিশ নিয়ে গবেষণামূলক এই সফলতা একটি নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে নতুন রেকর্ড।
আইসিএআর-সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিসারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ডক্টর বসন্ত কুমার দাস জানান, পুকুরের জলে ইলিশ মাছ নিয়ে আমাদের গবেষণামূলক প্রকল্প চলছে। আর সেই প্রকল্প অনেকটাই সফলতা লাভ করেছে। মাত্র ৩৬ মাসে একটি ইলিশের ওজন হয়েছে প্রায় ৭০০ গ্রাম। নদী থেকে ইলিশের বাচ্চা নিয়ে এসে পুকুরে প্রতিপালন করা হয়েছে। শুধু ইলিশ প্রতিপালন নয়। ইলিশের প্রজনন ঘটিয়ে ইলিশ উৎপাদনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।