মুরগির বাচ্চা বিতরণের উপভোক্তার তালিকায় স্বজনপোষনের অভিযোগ উঠলো বিজেপি পরিচালিত সাহাড়া পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। অভিযপগ উপভোক্তা তালিকায় দলের পঞ্চায়েত সদস্য, বুথ সভাপতি ও নেতাদের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা-১ ব্লকের বিজেপি পরিচালিত সাহাড়া পঞ্চায়েতের এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা তৈরী হয়েছে।
অভিযোগ পঞ্চায়েতের তালিকায় বিজেপি দলের নেতাদের নাম সরকারি মুরগির বাচ্চা নেওয়ার তালিকায় রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য, সদস্যের আত্মীয়, বুথ সভাপতি, অঞ্চল স্তরের নেতাদেরভেকজনও মুরগির বাচ্চা পাওয়ার তালিকার বাইরে রইলেন না। প্রকৃত উপভোক্তাদের বাদ দিয়ে বিজেপি নেতারা নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করায় তীব্র প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
দলের পঞ্চায়েত সদস্যা সরস্বতী দাস এনিয়ে তীব্র আপত্তি করলেও বিজেপি নেতাদের কোনও হেলদোল নেই। তাঁরা ১০টি করে মুরগির বাচ্চা নিয়ে হৈহৈ করে বাড়ি ফিরে যান।
৩১ জুলাই সাহাড়া পঞ্চায়েতে ২১০জনকে মুরগির বাচ্চা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকে ১০টি করে মুরগির বাচ্চা পেয়েছেন। রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর মুরগির বাচ্চা দিয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সেইসব বাচ্চা বিলি হচ্ছে।
উপভোক্তা তালিকায় বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য খগেনকুমার দত্ত, দলের তেলামি বুথ সভাপতি নির্মল বেরার স্ত্রী মমতা বেরা, দলের পঞ্চায়েত সদস্যা সোমা শী-র কাকিমা চন্দনা শী সহ স্বজনপোষণের দীর্ঘ তালিকা।
ভোটে যাঁরা বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন, উপভোক্তা তালিকায় তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বিজেপির হোল টাইমারদের একচেটিয়া ওই সুবিধা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দলের বুথ সভাপতি, অঞ্চল নেতৃত্ব এবং পঞ্চায়েত সদস্যও সেই সুবিধা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ।
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপির বুথ সভাপতি নির্মল বেরা বলেন, আমার স্ত্রী মুরগির বাচ্চা পাওয়ার মধ্যে কোনও ত্রুটি ঘটেনি। কারণ, পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় থাকলে সব দলই কমবেশি নিজেরটা দেখে। আমরাও তার বাইরে নই। এর আগে তৃণমূল কংগ্রেসও তাই করেছে। আমরা তৃণমূল কর্মীদের এলাকায় চার লক্ষ টাকা খরচে রাস্তার কাজ করে দিয়েছি। সামান্য মুরগির বাচ্চা নিয়ে এত অভিযোগ তোলা ঠিক নয়।
বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য খগেনকুমার দত্ত বলেন, বিডিও অফিস থেকে জরুরিভিত্তিতে উপভোক্তা তালিকা চাওয়া হয়েছিল। সেসময় উপভোক্তা খুঁজতে হিমশিম খাওয়ার মতো অবস্থা। তাই উপভোক্তা হিসেবে আমার নাম এন্ট্রি হয়। আমি মুরগির বাচ্চা নেওয়ার পর অন্যকে দিয়ে দিয়েছি।
তৃণমূল কংগ্রেসের সাহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সরস্বতী দাস বলেন, মুরগির বাচ্চা বিতরণ নিয়ে স্বজনপোষণের দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে বিজেপি। দলের পঞ্চায়েত সদস্য থেকে বুথ সভাপতি কেউই বাদ যাননি। আমি এনিয়ে প্রতিবাদ করেছি।
এগরা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমিয় দাস বলেন, সরকারি স্কিমে উপভোক্তা তালিকা নিরপেক্ষ হওয়া বাঞ্ছনীয়। সেখানে দলের পদাধিকারী কিংবা পঞ্চায়েত সদস্যদের নাম থাকলে দৃষ্টিকটু লাগে। আশা করব, বিজেপি পরিচালিত সাহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত আগামী দিনে এরদিকে নজর দেবে।