এই রাজ্যের প্রতিবেশী রাজ্য উড়িষ্যা। বিশেষ করে চন্দনেশ্বর, বালেশ্বর, জলেশ্বর, কটক ভুবনেশ্বর, গুঞ্জাম, ধামরা বন্দর সহ রউরকেল্লা ও সমগ্র ওডিশা জুড়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরি, কাঁথি ,দেশপ্রাণ, রামনগর, এগরা সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের বর্ডার এলাকাগুলির বহু মানুষ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে যাতায়াত ও বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
বিশেষ করে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী ও রোগীর পরিবারের লোকজন কটক, ভুবনেশ্বর, এমস সহ হাসপাতাল গুলিতে রোগী নিয়ে যাতায়াত করছেন। এবং কোন কোন ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার জন্য এলাকায় ঘর ভাড়া করে থেকে যেতে হচ্ছে। প্রায় লক্ষাধিক মানুষ কায়িক শ্রমের মাধ্যমে রুটি-রুটির জন্য এলাকা ছেড়ে এই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে রয়েছেন। কখনো, কোন হুমকিও ধমকের সম্মুখীন হতে হয়নি। কিন্তু এই কয়েক মাসের মধ্যে রাজ্যের পালাবদলের সাথে সাথে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার ফলে পরিযায়ী শ্রমিকদের ধমক, হুমকি এবং এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা জানিয়ে দিচ্ছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখানে মুসলিম ও গরিব তপশিলি সম্প্রদায়ের মানুষ জন দের থাকা চলবে না বলে ফতোয়া জারি করেছে। দীর্ঘদিন থাকার ফলে ওই এলাকার মানুষের সঙ্গে এ এলাকার মানুষের একটা সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এবং অনেকে বৈবাহিক সম্পর্কের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছেন। এখন এই অংশের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
খেজুরির কুশদ্বজ ভূঁইয়া, পরান ভূঁইয়া ,আশুতোষ প্রামাণিক, কালিপদ মণ্ডলরা ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত। এদের সাথে অন্যান্য শ্রমিকদের ও চলে যাওয়ার উঠেছে। ওই সঙ্গে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে খেজুরীর একটা বড় অংশ চাষের কাজে ও ফেরির কাজে যুক্ত। তাদের ও চলে যেতে হবে। শেখ মুশারফ, শেখ মতিউর, শেখ মিলাদের ও বলে দেওয়া হয়েছে এখানে থাকা যাবে না। কোন কাজ করা যাবে না। বাঙ্গালীদের বাংলায় ফিরে যেতে হবে। বউ ,ছেলে মেয়েদের নিয়ে এরা খুব সমস্যায় পড়েছেন।এই সমস্যার ফলে দলে দলে পরিযায়ী শ্রমিক সিপিআইএমের ভুবনেশ্বর রাজ্য পার্টি অফিসে গিয়ে আবেদন জানাচ্ছেন, যাতে প্রশাসনিক স্তরে কথা বলে এই সমস্যার সমাধান করা যায়।
ইতিমধ্যে ওডিশার সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব সন্তোষ দাসের সঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নেতৃত্ব ও রাজ্য কমিটির সদস্য হিমাংশু দাসের কথা হয়েছে। মূলত মমতা ব্যানার্জি এ রাজ্যের আলু না পাঠানোর জন্য এই সমস্যা বেশি করে দেখা দিয়েছে বলে ওই এলাকার মানুষের অভিমত। তাছাড়া আরএসএস ও বিজেপির উগ্র হিন্দুত্ববাদী কার্যক্রমের একটা প্রভাব রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। এ কয়দিন কাজে যাওয়ার ক্ষেত্রে শ্রমিকরা বাধা প্রাপ্ত হচ্ছেন এবং গোডাউন গুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি বাধাদানের সাথে সাথে মারধর ও করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে কোলাঘাট ব্লক এলাকার দুটি বাসে করে বহু শ্রমিক প্রাণভয়ে পালিয়ে আসছেন।
পূর্ব মেদিনীপুর সিপিআইএম জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি এবিষয়ে রাজ্য কমিটির কাছে জানিয়েছেন। যাতে এই সমস্যার সমাধান দ্রুত করা যায়।
বুধবার পাঁশকুড়া থানা ও বিডিও অফিসে বিক্ষোভ দেখায় উড়িষ্যা থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে পালিয়ে আসা এক দল পরিযায়ী শ্রমিক