Select Language

[gtranslate]
৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

তপন থিয়েটারে মঞ্চস্থ হতে চলেছে ”  নিঃসঙ্গ ঈশ্বর “

ইন্দ্রজিৎ আইচ :- আগামী  শনিবার  তপন থিয়েটারে অভিনীত হতে চলেছে বেঙ্গল রেপার্টরীর নবতম প্রযোজনা ‘নিঃসঙ্গ ঈশ্বর’। বলা বাহুল্য অভিনয় আর প্রয়োগে এই ‘ভান’ টি দর্শকদের  মন্ত্রমুগ্ধ করবে। ভারত সংস্কৃতির সব থেকে বর্ণময়, বিচিত্র এবং সর্বব্যাপ্ত চরিত্র শ্রীকৃষ্ণ কে কেন্দ্র করে আবর্তিত  হয়েছে নাট্যবস্তু। তবে এখানে শ্রীকৃষ্ণ কোন ভগবান নয়। এখানে তিনি একেবারেই মানুষ। রক্ত মাংসের মানুষ। ‘নিঃসঙ্গ ঈশ্বর’ শ্রীকৃষ্ণের ঐশ্বরিক জীবন, তাঁর মহান ব্যাপক অবিশ্বাস্য বিস্তৃত কর্মজীবন এবং অপর পক্ষে তাঁর একান্ত মানবিক ইচ্ছা, তাঁর মনের অদম্য বাসনা, তাঁর অন্তরের স্বাধীন মনোভাব, মুক্তি চেতনা… এই দুই পক্ষের দ্বন্দকে বর্নিত করে। কোথায় যেন তাঁর নিজেরই অমোঘ বানী “মা ফলেষু কদাচন…”, এর বিরুদ্ধে গিয়ে তাঁর ভেতর থেকে বেড়িয়ে আসে অবদমিত নিঃসঙ্গ এক মানুষ। সেই মানুষটাকেই খোঁজার চেষ্টা হয় ঈশ্বরের খোলস ছাড়িয়ে, ঈশ্বরের জীবনের  অন্তিম  দিনে।

এই নাট্য ঘটনাটি কল্পিত এবং এই নাট্য ঘটনাটি ঘটে শ্রীকৃষ্ণের জীবনের শেষ দিনে। সুদূর অতীতে ঘটে গিয়েছে মহাভারতের যুদ্ধ। এমনকি যাদবদের বিনাশও ঘটে গিয়েছে। এখন তিনি একা। একাকী তিনি এসে বসেছেন এক অরণ্যের গভীরে। তাঁর ভেতর থেকে বেড়িয়ে আসে তাঁর নানান দ্বন্দ্বময়তা; পাওয়া, না-পাওয়া, চাওয়া, তাঁর সমস্ত কর্মজীবনের বিভিন্ন স্মৃতি। তাঁর জীবনের বিশেষ বিশেষ মানুষদের সাথে তাঁর সম্পর্কের টানাপড়েন, লেনদেন সবকিছু। জীবনের শেষ দিনে এসে তাঁর বারবার মনে পড়ে যায় মাতা গান্ধারীর অভিশাপের কথা। মনে পড়ে যায় কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁর শপথ ভঙ্গের কথা। মনে পড়ে জরাসন্ধের ভয়ে তাঁর সন্ত্রস্ত হয়ে থাকার সেই মানবিক দিনগুলোর কথা। মনে পড়ে যায় তাঁর প্রেম, ভালোবাসা, কর্ম, তাঁর ব্যার্থতা, তাঁর ক্রোধের কথা। সে যেন নিজেই নিজেকে দেখতে থাকে এক মানুষ হিসেবে। ক্রমশ ক্রমশ খসে পড়তে থাকে তাঁর অবতারের আবরণ। তাঁর ঐশ্বরিক খোলস। বেড়িয়ে আসে ভেতরের মানুষটা, যে হাহাকার করে, চিৎকার করে, বুক চাপড়ায় আর অপেক্ষা করে তাঁর পরম পরিনতির, তাঁর মৃত্যুর। এই সম্পুর্ন নাট্য সাহিত্যটি সংকলিত করেছেন সোহম গুপ্ত এবং সুমন সাহা। সঙ্গীত সৃজন করেছেন  শুভাশিষ সরকার এবং জয়দীপ সিনহা। অতিথি সুরকার রুপে গানগুলিতে সুরারোপ করেছেন  শুচিশ্রী রায়। কন্ঠ সঙ্গীতে সোহিনী এবং বেহালায় রয়েছেন জয়িতা। নামাঙ্কন করেছেন  গৌতম বরাট। আলোক পরিকল্পনা এবং প্রক্ষেপন  করেছেন সৈকত মান্না ও সৌম্যজিৎ অধিকারী।  অভিনয় করেছেন  সুমন সাহা ও চন্দ্রানী সরকার। এই ভানটির প্রয়োগ ও সামগ্রিক পরিকল্পনা  করেছেন সুমন সাহা। বেঙ্গল রেপার্টরী নিবেদিত  এই নাট্য প্রযোজনাটি ভরত নাট্যশাস্ত্রে বর্ণিত দশ রুপকের মধ্যে অন্যতম একটি রুপক ‘ভান’ শৈলীতে গঠিত হয়েছে।

ekhansangbad
Author: ekhansangbad

Related News

Also Read