প্রতিবেশী এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করে কীটনাশক খাইয়ে প্রাণে মেরে ফেলার অভিযোগে এক ব্যাক্তিকে পিটিয়ে প্রাণে মেরে দিলো মহিলা বাহিনী ! ক্ষিপ্ত গ্রামবাসী রবিবার সকালে অভিযুক্তকে বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক গণধোলাই দেয়। লাঠি, বাঁশ নিয়ে তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে গ্রামের মহিলা বাহিনী। সেই অভিযুক্তকে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই এই ব্যাক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানা এলাকায়। ইতিমধ্যে দুই ঘটনারই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
মৃতার পরিবারের দাবী, গত ৪ অক্টোবর দুপুর নাগাদ বাড়ির পেছনের মাঠে গরু ছাগল চরাতে গিয়েছিলেন মহিলা। সেখান থেকেই তাঁকে তুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এরপর অভিযুক্ত তার সহযোগীদের সাথে মিলে মহিলাকে ধর্ষন করার পর সেই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মুখে বিষ ঢেলে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি যখন সবার নজরে আসে সেই সময় মহিলা বিবস্ত্র অবস্থায় পড়েছিল ও তাঁর মুখ থেকে গ্যাঁজলা বেরহচ্ছিল। মহিলাকে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, পরে সেখান থেকে তাঁকে তমলুকের একটি বেসরকারী নারসিং হোমে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করা হয়। তবে রবিবার ভোর রাতে সেখানেই মহিলার মৃত্যু হয়।
মৃতার পরিবারের ওই সদস্য জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি মহিলার দূর সম্পর্কের আত্মীয়। তাঁদের বাড়ির দূরত্বও খুবই সামান্য।ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীর দাবি অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে প্রতিবেশী এক মহিলার অবৈধ সম্পর্ক ছিলো। তাঁদের ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলেছিলেন ওই গৃহবধূ। সেই খবর পাঁচকান হওয়ার পরেই গৃহবধূকে একাধিকবার হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই কারনেই গত শুক্রবার মহিলাকে একা পেয়েই তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে মুখে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ।
অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গণধোলাইয়ে মৃত ব্যক্তির নাম সুখচাঁদ মাইতি। এদিন সকালে গ্রামের মহিলারা তাঁকে বাড়ি থেকে টেনে রাস্তায় ফেলে মারধর করতে থাকে। এই ঘটনার একাধিক ভিডিওয় দেখা গেছে, বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে গ্রামের মহিলারা রীতিমতো বাঁশ, লাঠি দিয়ে ওই ব্যক্তিকে রাস্তায় ফেলে মারধর করছেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযুক্তের মৃতদেহটিকে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদ্বীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন,অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। আইনী প্রক্রিয়া মেনে ইতিমধ্যেই মহিলার মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আজ দেহটিকে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, একই সঙ্গে গণধোলাইয়ের ঘটনায় মৃত ব্যক্তির দেহ ময়না তদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি এই ঘটনারও পৃথক তদন্ত শুরু হয়েছে।