ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র প্রভাবে গত দু’দিন ধরে একটানা ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খেজুরির প্রত্যন্ত এলাকা। চরম উৎকণ্ঠা নিয়ে ত্রাণ শিবিরে রাত কাটাতে হচ্ছে দুর্গতদের। আর সেখানে গিয়েই চরম বিড়ম্বনায় পড়লেন খেজুরির বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক। তাঁকে ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান ত্রাণ শিবিরে থাকা গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, দুর্যোগ চলাকালীন এলাকায় দেখা মেলেনি বিধায়ক বা তাঁর অনুগামীদের। এখন নিছক প্রচার পেতেই এখন ত্রাণ শিবিরে এসেছেন। চাপে পড়ে কিছু সময়ের মধ্যেই এলাকা ছাড়েন বিধায়ক। পরে শান্তনু জানান, “সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমার ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এখানে সর্বদা জঙ্গলের রাজত্ব চলে। আমরা শীঘ্রই এর প্রতিবাদ জানাব”।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে জোরাল বৃষ্টির জেরে খেজুরির বারাতলা অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এর জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০টি মাটির বাড়ি। এই সমস্ত দুর্গত এলাকা থেকে প্রায় ৩৫টি পরিবারের দেড়শ মানুষ বারাতলার অন্তর্গত আমড়াতলা প্রাইমারী স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। এলাকার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য গৌরিশঙ্কর দাসের নেতৃত্বে এই ত্রাণ শিবির চালানো হচ্ছে বলে খবর। তবে সেই সময় এলাকার কোনও বিজেপি নেতা কর্মীকেই এই দুর্গত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি বলেই এলাকাবাসীদের দাবী।
শনিবার সন্ধ্যে নাগাদ এই ত্রান শিবিরটি পরিদর্শনে আসেন এলাকার বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক। তিনি ত্রাণ শিবির থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথে গ্রামবাসীরা শান্তনুকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। গৌরিশংকরের নেতৃত্বে তৃণমূলের লোকেরাও বিক্ষোভে সামিল হন। সেখানেই গৌরিশংকর প্রশ্ন করেন, দলমত নির্বিশেষে সবাইকে যেখানে ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে সেখানে বিজেপির কোনও নেতা কর্মীদের আগে কেন দেখা যায়নি। প্রত্যুত্তরে বিধায়ক জানান, তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু কেউ কেন আসেননি তা তাঁর জানা নেই। বিধায়কের এই কথা শুনেই গ্রামবাসীদের ক্ষোভ চরমে ওঠে। সেই সময় কেন্দ্রীয় বাহিনির ঘেরাটোপে কোনওক্রমে এলাকা ছাড়েন শান্তনু।
পরে গৌরিশংকর জানান, “চরম দুর্ভোগের মধ্যে এলাকাবাসীদের উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে আনা হয়েছে। কিন্তু সেই সময় কোনও বিজেপির নেতা কর্মীদের পাশে পাওয়া যায়নি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই বিধায়ক ছুটে এসেছেন প্রচার পাওয়ার লক্ষ্যে। এরই প্রতিবাদে গ্রামবাসীরা বিধায়ককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন, তাঁর নির্দেশ পেয়েও কেউ এলাকায় আসেননি”। অন্যদিকে বিধায়ক এলাকাছাড়ার পর সংবাদমাধ্যমে জানান, “আমার দলের লোকেরাই গ্রামবাসীদের উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে গিয়েছে। এখন তৃণমূল সূযোগ বুঝে আমাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। এলাকাবাসীরাই এদের প্রতিরোধ করবে”।
