বাংলা আবাস যোজনার তালিকা অনুসারে উপভোক্তাদের গৃহ পরিদর্শন সহ কৃষিক্ষেত্রের বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের বিষয় খতিয়ে দেখতে আজ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট ব্লকে আসেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা তথা রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। সঙ্গে ছিলেন ওই দপ্তরের প্রধান সচিব ,পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসক ,অতিরিক্ত জেলা শাসক(উন্নয়ন),তমলুকের মহকুমা শাসক, কোলাঘাটের বিডিও প্রমুখেরা। মন্ত্রী প্রথমে সমস্ত আধিকারিকদের নিয়ে কোলাঘাট বিডিও অফিসে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করেন। তারপর উনি সাগরবাড় ও সিদ্ধা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকজন উপভোক্তার বাড়ি এবং বাংলা শস্য বীমা প্রকল্পের ফর্ম পূরণের শিবির পরিদর্শন করেন।
ওই পরিপেক্ষিতে বন্যা ও জলবন্দী পরিস্থিতির কারণে জেলার ক্ষতিগ্রস্ত ফুলচাষী সহ সমস্ত কৃষকদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও স্থায়ী জলনিকাশী সমস্যার সমাধানের চার দফা দাবীতে কৃষক সংগ্রাম পরিষদ ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ফুলচাষী ও ফুলব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে মন্ত্রীকে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
দাবীগুলির মধ্যে অন্যতম হলো-
১) বন্যা ও জলবন্দী পরিস্থিতির কারণে কোলাঘাট,পাঁশকুড়া ব্লক সহ জেলার সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত ধান,ফুল,সবজি চাষীদের শুধুমাত্র বাংলা শস্য বীমার ক্ষতিপূরণ নয়, অবিলম্বে উপযুক্ত সরকারি সাহায্য প্রদান করতে হবে।
২) আগামী বোরো মরশুমে চাষে সহায়তা করার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত সমস্ত কৃষকদের সার,বীজ,কীটনাশক বিনামূল্যে সরবরাহ করতে হবে।
৩) কোলাঘাট ও পাঁশকুড়া ব্লকের জলনিকাশী সমস্যার স্থায়ী সমাধানে সমস্ত নিকাশী খালগুলিকে আগামী বর্ষার পূর্বেই পূর্ণ সংস্কার করতে হবে। এবং জলবন্দী এলাকার জমে থাকা জল জরুরী ভিত্তিতে বের করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪) ফুলকে ‘কৃষিপণ্য’ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে কোলাঘাট ও পাঁশকুড়া ব্লকে দেউলিয়া,কোলাঘাট সহ যে সমস্ত ফুলের বাজার রয়েছে,সরকারি উদ্যোগে সেই সমস্ত বাজারগুলিকে আধুনিক ফুলবাজার হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। সরকারি উদ্যোগে নির্মিত পাঁশকুড়া ফুলবাজারে বন্ধ হয়ে যাওয়া হিমঘরটি অবিলম্বে চালু করতে হবে।
সংগঠন দুটির সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় “দানা” ও নিম্নচাপজনিত প্রবল বৃষ্টি ও ব্যারেজ থেকে একসঙ্গে অত্যধিক পরিমাণে জল ছাড়ার কারণে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলার সাথে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কিছু এলাকা ভয়াবহ বন্যা ও বেশ কিছু অংশ জলবন্দী হয়ে নানাভাবে ভীষণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ফুলের উপত্যকা হিসেবে পরিচিত পাঁশকুড়া ব্লকের ফুলের চাষ একেবারে বিনষ্ট হয়ে গেছে। পুজোর মুখে একসঙ্গে বিশাল পরিমাণ ফুলের চাহিদা মেটানোর জন্য বহু টাকা খরচ করে যে ফুলচাষীরা নানান ধরনের ফুলের চাষ করেছিল তা প্রায় ধুলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে। ফলস্বরূপ ওই চাষীদের পুনরায় চাষে হাত দিতে গেলে প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ অর্থের। যা সরকারি সাহায্য ব্যতিরেকে কোনভাবেই সম্ভব নয়। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকার ফুলকে “কৃষিপণ্য” হিসাবে স্বীকৃতি না দেওয়ায় ফুলচাষীদের জন্য কোন বীমা প্রকল্পেরও সুযোগ নেই।