আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রাক্তন করার হুশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই রবিবারনন্দীগ্রামের শহীদ মঞ্চ থেকে নিজের রনকৌশল ঘোষণা করলেন কৌশলী শুভেন্দু অধিকারী।
তিনি বলেন, ২০২৬এ তৃণমূলকে উৎখাতের ব্লপ্রিন্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে। যেখানে পথ দেখাবে নন্দীগ্রাম, আর বাকী রাজ্য জুড়ে আন্দোলন সংগঠিত করার দায়িত্ব আমি লিলাম। কোন পদ্ধতিতে আন্দোলন চলবে তার কিছু রূপরেখাও এদিন তুলে ধরেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। শুভেন্দু জানান,আমি সবটা গুছিয়ে এনেছি, এবার ওনাকে ঠিক প্রাক্তন করে ছাড়ব।
নন্দীগ্রামবাসীকে উদ্দেশ্য করে শুভেন্দু জানান, “আপনারা গত বিধানসভা ভোটে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রাক্তন করেছেন, এবার আমার দায়িত্ব ওনাকে প্রাক্তন করা। এই কাজটা আমি করব”। শুভেন্দুর অনুযোগ, “যে আন্দোলন থেকে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী তিনি সেই আন্দোলনকারীদের জন্য পরবর্তীকালে কিছু করেননি”। তৃণমূল নেত্রীকে আক্রমণ করে শুভেন্দু জানান, “মুখ্যমন্ত্রীর চরিত্র আপনারা জেনে রাখুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের দয়ায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। অথচ নন্দীগ্রামের ১১ জন নিখোঁজের জন্য ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার কোনও উদ্যোগই নেননি। মাস তিনেক আগে আমি নিজে হাইকোর্টে আবেদন করে এই মৃত পরিবারদের হাতে ডেথ সার্টিফিকেট তুলে দিয়েছি”।
শুভেন্দুর দাবী, “আমিআপনাদের ভাঙিয়ে রাজনীতি করি না। প্রতি বছর নিয়ম করেই নন্দীগ্রামের শহীদ দিবস পালন করি। এখান থেকে সোজা উত্তরবঙ্গে যাব। মানুষ আমার সঙ্গে আছে, আমার দুর্গে কেউ ফাটল ধরাতে পারবে না”। শুভেন্দুর দাবী, “নন্দীগ্রামের ৪০টি সমবায়ের মধ্যে ৩০টিতেই আমরা জিতব যদি ভোট করানো হয়। এখানে আমি ঘরে ঘরে আছি, আমাকে কিছু দিতে হয় না”। এদিন শুভেন্দু জানান, “নভেম্বর শেষের দিকে নন্দীগ্রামের গোকুলনগরে একটি বড়সড় ধর্মরক্ষা সমাবেশ হবে। বাংলাদেশ থেকে এই রাজ্যে কি পরিস্থিতি তার সবটাই এই ধর্মরক্ষা সমাবেশে আলোচনা হবে”।
প্রসঙ্গতঃ ২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামের করপল্লীতে জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনকারীদের মিছিলে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তৎকালীন শাসক দল সিপিএমের বিরুদ্ধে। সেই হামলায় ১১ জন জমি আন্দোলনকারী নিখোঁজ হয়ে যান। প্রাণ যায় একাধিক মানুষের। এই ঘটনার রেশ ধরেই প্রতিবছর এই দিনটিতে করপল্লীর শহীদ বেদীতে স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। একটা সময় ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে এই শহীদ দিবস পালন হলেও বর্তমানে তা তৃণমূল ও বিজেপি দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে।