সারা রাজ্যে ধর্ষণ মামলা নিয়ে উত্তাল রাজ্যবাসী।সেই আবহে উল্টো সুর বাজল কাঁথি আদালতে। এই প্রথমবার নয় তিন মাসের মধ্যে এটি দ্বিতীয়বার। সোমবার কাঁথি পকসো বিশেষ আদালতের বিচারপতি অজয়ন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য রেপ এবং পকসো এর অভিযোগের একটি মামলায় রায়দান করেন। এবং সেই রায়ের আসামিকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করার জন্য বাদীর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনার সূত্রপাত ২০১৯ সালের ২০ আগস্ট তারিখ। পটাশপুর থানায় নির্যাতিতার মা অভিযোগ করে জানান ২০১৯ সালের ১১ জুন তারিখ রাত্রি ৯টায় তার ১৭ বছর বয়সী কন্যা টিউশন পড়ে বাড়ি ফিরছিল। সেই সময় অভিযুক্ত তাকে তার বাড়ি নিয়ে যায়। এরপর নির্যাতিতা কে ওল্ড ড্রিংক্স এর সাথে কিছু মিশিয়ে খাইয়ে দেয় অভিযুক্ত। নির্যাতিতা অজ্ঞান হয়ে যান। তারপর তার উপর পাশবিকভাবে যৌন নির্যাতন চালানো হয়। সেই সময় গোপনাঙ্গের ছবি তুলে রাখে অভিযুক্ত। সেই রাতে বাড়ি না ফিরলেও পরদিন বাড়ি ফিরে নির্যাতিতা। ছবি ভাইরাল হওয়ার ভয়ে কাউকে কিছু না বললেও নির্যাতিতার মা মেয়ের শারীরিক অবস্থা দেখে সন্দেহ করেন। পরবর্তীকালে সাহস যুগিয়ে ঘটনার কথা বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার মা। এরপর অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হয়। পুলিশ দ্রুত তদন্ত শেষ করে এবং রেপ সহ পকসো ধারায় তদন্ত রিপোর্ট জমা করে।বিচার শুরু হলে অভিযোগকারীনি, নির্যাতিতা সহ নির্যাতিতার বাবা আদালতে সাক্ষী দেন। বিচারপতি নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি সহ বাকিদের সাক্ষ্য দান বিচার করে দেখেন অভিযোগের সঙ্গে প্রকৃত ঘটনার চূড়ান্ত গরমিল। সেই সঙ্গে নির্যাতিতার সাক্ষীসহ নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দীর সম্পূর্ণ আলাদা। বিচারের সমস্ত দিক বিবেচনা করে বিচারপতি অজয়েন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য পকসোর ২২ ধারা এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৯১ / ২১১ ধারা মতে অভিযোগ কারীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। কাঁথি আদালতের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয়বার। প্রথমবারও পকসো বিশেষ আদালতের এই বিচারপতি এরকম রায় দিয়েছেন। আইনজীবীদের কথায় পকসোর অপব্যবহার রুখতে বা মিথ্যা রেপ মামলা রুখতে এ ধরনের রায়দান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।মানুষ সচেতন হবে এবং বুঝবে আইনকে আক্রমণের অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করলে তার ফল হতে পরে বিপরীত। সেই কারণে কমবে অপব্যবহার।