শুরু হল রাস উৎসব। তাই সাজো সাজো রব এগরার আলংগিরি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরার আলংগিরির শ্রেষ্ঠ উৎসব রাস। এই রাস উৎসব উপলক্ষে বৈষ্ণব ধর্মালম্বী মানুষ তো বটেই এছাড়াও বহু দূরদুরান্ত থেকে মানুষ ইতিমধ্যেই আলংগিরিতে এসেছেন রাস দেখতে। রাসলীলা বা রাস যাত্রা সনাতন ধর্মলম্বীদের একটি বিশেষ উৎসব । রাস মূলত, শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলার অনুকরণে বৈষ্ণবীয় ভাবধারার অনুষ্ঠিত এক ধর্মীয় উৎসব। জনশ্রুতি প্রচলিত আছে যে শ্রীচৈতন্যদেব রাধাকৃষ্ণের রাস উৎসব সূচনা করেছিলেন নদীয়ার নবদ্বীপে। তাই এবার আলংগিরিতে রাসের প্রধান বিশেষত্ব হচ্ছে শ্রী শ্রী রাধাগোকুলানন্দ জিউ ঠাকুরের রাস। অপরূপ মৃন্ময়ী মূর্তি নির্মাণ করে নানা রূপে শক্তি আরাধনায় আলংগিরি রাসের প্রধান বৈশিষ্ট্য। তবে এবার প্রায় চারশো বছরের পদার্পণ প্রাচীন রাশের ঐতিহ্য। চিরাচরিত উচ্চতার ঐতিহ্য মেনেই করা হয়েছে গোকুলানন্দ জিউ’র সুবিশাল মন্দির। এক সময়ে রাস মানে ছিল পূর্ণিমার ভরা রাতে বিশুদ্ধ তন্ত্র মন্ত্রে শক্তি মূর্তি সাড়ম্বরে পুজো। কার কত বড় প্রতিমা তা নিয়ে চলত প্রতিযোগিতা।
তবে এবছর সেই প্রথা ভেঙে বেরিয়ে এসেছেন শ্রী শ্রী রাধাগোকুলানন্দ জিউ ঠাকুরের সেবা পরিচালনা ট্রাস্ট কমিটি। এদিন রাতে আলংগিরিতে রাস উৎসবের সূচনা করেন এগরার ১ ব্লকের বিডিও দূর্গাপ্রসাদ ঘোষ ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমিয় কুমার রাজ৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এগরা থানার আইসি অরুণ কুমার খাঁ, এগরা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সত্য চক্রবর্তী, ব্লকের এসইও শিবুরঞ্জন সিং, স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিন্দিতা ঝাঁ, বিশিষ্ট সমাজসেবী আইয়ুব খান ও বিশ্বজিৎ বেরা, শল্য চিকিৎসক বাদল অশ্রু ঘাটা, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য হরেকৃষ্ণ পাল প্রমুখ। আয়োজক সংস্থার সভাপতি নন্দদুলাল সাউ জানিয়েছেন, আলংগিরি রাস উৎসব এগরার সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী। দশদিন ধরে চলবে নানান সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রয়েছে কয়েক হাজার মানুষের নরণারায়ণ সেবা। কিন্তু সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়াতে এই কর্মসূচি। উপস্থিত ছিলেন কমিটির সম্পাদক প্রদীপ আইচ, স্বপন ক্যামিলা, অমৃতলাল সাউ, রতনলাল সাউ, দীপু পন্ডা, সুকুমার সাউ প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সব্যসাচী দাস।