পঞ্চায়েত সমিতি কে অন্ধকারে রেখে বিডিও সমস্ত ধরনের উন্নয়নের এবং আবাস যোজনার তালিকার ক্ষেত্রে কাজ করছেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন কাঁথি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অর্চনা পয়ড়্যা।অভিযোগ আবাস যোজনার চূড়ান্ত তালিকা সভাপতি কে বিডিও দেয়নি। যারা একাধিকবার আবাস যোজনায় বাড়ি পেয়েছেন তাদের নাম এবং পাকা বাড়ি আছে এমন ব্যক্তির নাম আবাস যোজনায় রয়েছে। সার্ভে করার পরেও সেই নাম গুলি বাদ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। অর্চনা দেবী আরো বলেন আবাস যোজনা সম্পর্কিত একটি অভিযোগ বাক্স করা হয় কিন্তু সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়নি। শুধু তাই নয় সরকারিভাবে নবান্ন থেকে যে গাইডলাইন তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল তাও মানা হয়নি। সংসদে নাম মঞ্জুর করে এলেও সেই নাম একটিও তালিকাভুক্ত হয়নি বা তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন জনগণের কাজ করতে এসে এখানে দলগত কাজ করাটা অনুচিত যা তিনি করেন না। আবাস যোজনা ক্ষেত্রে বহু মানুষ এসে সভাপতি এবং বিডিওর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কোন কাজ হয়নি বলে তিনি বলেন। এমনকি রাইপুর পশ্চিম বাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি এলাকায় ১৭টি পরিবারের বাড়ি তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য শাসক দলের প্রতিনিধিরা অভিযোগ আর করেও কোন সুফল পায়নি। এছাড়াও সমস্ত ধরনের উন্নয়নের কাজ এর ক্ষেত্রে বিডিও একাই সিদ্ধান্ত নেন। ঠিকাদার যদি খারাপ কাজ করেন সেক্ষেত্রে অভিযোগ করেও কোন সূরাহা হয়নি। শুধু তাই নয় কোন মিটিং সঠিকভাবে করেন না। স্থায়ী সমিতির কর্মধ্যক্ষদেরও কোন গুরুত্ব দেন না।ঠিকাদারের বিল পেমেন্ট এর ক্ষেত্রে বা টেন্ডারের ক্ষেত্রে কোন কিছুই সভাপতি কে বা স্থায়ী সমিতিকে জানানো হয় না। পঞ্চায়েত সমিতির নতুন ভবন তৈরির ক্ষেত্রেও পঞ্চায়েত সমিতিকে অন্ধকারে রেখে কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিডিও পঞ্চায়েত সমিতির কোন কথাই শোনেন না। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ অমলেন্দু সৎপতি বলেন বিডিও অমিতাভ বিশ্বাস শাসক দলের নেতার মত কাজ করছেন। আবাস যোজনা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোন মতামত পঞ্চায়েত সমিতির নেন না বা তিনি জানান না। মিটিং নিয়েও বিস্তর অভিযোগ তুললেন। কখন মিটিং ডাকেন তাও কেউ জানতে পারেন না। এক্ষেত্রে অর্চনা দেবী এবং অমলেন্দু বাবু বলেন কোন মিটিং এর রেজুলেশনে তাদের কাছ থেকে স্বাক্ষর করানো হয় না। আরো বলেন কৃষকদের জন্য যে উন্নত ধরনের বীজ আসে কিন্তু বিতরণের সময় পঞ্চায়েত সমিতিকে জানানো হয় না। একইভাবে মাছের চারা, চুন,খাদ্য আসে বিতরণের সময় পঞ্চায়েত সমিতিকে অন্ধকারে রাখা হয়। গরু, ছাগল, মুরগি সব কিছুরই ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় জানানো হয় না। এভাবে একগুচ্ছ অভিযোগ আনলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ সহ-সভাপতি ও কর্মাধ্যক্ষ গণ। এই ব্যাপারে কাঁথি ১ ব্লকের বিডিও অমলেন্দু বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। যদিও কৃষি সম্পর্কিত মিটিং চলাকালীন কর্মাধ্যক্ষের অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। অথচ কর্মাধ্যক্ষ পঞ্চায়েত সমিতিতেই উপস্থিত ছিলেন।
বিডিও বলেন সবকিছু নিয়ম মেনেই করা হচ্ছে। মিটিং এর রেজুলেশনে সভাপতি সহ কর্মাধ্যক্ষদের স্বাক্ষর আছে। যদিও এই কথার বাস্তবতা নেই বলে বলেন স্বাস্থ্য স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নীলেশ মন্ডল। আবাস যোজনা সম্পর্কে বিডিও বলেন তালিকা থেকে ১৭ শতাংশ নাম বাদ গেছে। অভিযোগ থাকলে সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। কৌশলে সাংবাদিকদের অনেক প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এই ব্যাপারে পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা আমিন সোহেল বলেন বিডিও সমস্ত কিছু নিয়ম মেনে করছেন।আবাস যোজনার ক্ষেত্রে প্রতিটি পঞ্চায়েতে সার্ভের সময় আধিকারিকগণ স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের নিয়ে করেছেন। শুধু তাই নয় অনেকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে শাসক দলের কোন ভূমিকা নেই। গভমেন্টের গাইডলাইন মেনেই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। সভাপতি যা অভিযোগ করছেন তার কোন বাস্তবতা নেই।