অভয়া খুনের দ্রুত বিচার,পরিচারিকাদের সপ্তাহে একদিন সবেতন ছুটি,সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরী ,বাংলা আবাস যোজনায় সকল পরিচারিকার গৃহ নির্মাণ,কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও মাতৃত্বকালীন ছুটির অধিকার সহ পরিচারিকাদের পেশাগত একগুচ্ছ দাবীতে সারা বাংলা পরিচারিকা সমিতির পক্ষ থেকে আজ ২২ ডিসেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদায় বিক্ষোভ মিছিল ও বিদ্যাসাগর হলে দ্বিতীয় রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রাজ্যের সমস্ত জেলা থেকে সহস্রাধিক পরিচারিকা এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। কাকভোরে উঠে প্রত্যন্ত গ্রাম কিংবা শহরতলীর কোন ঘুপচি ঘর থেকে যে মা -বোনেরা বের হয়ে মধ্যবিত্ত উচ্চ-মধ্যবিত্তদের বাসন ধোয়া,ঘর পরিষ্কার,কাপড় কাচা কিংবা বাবুদের সন্তান প্রতিপালন করে শত অভাব-অভিযোগ মাথায় নিয়ে সুনিপুন হাতে নির্বাকমুখে প্রতিদিন যারা গুছিয়ে তোলে,সেই পরিচারিকাদের জীবনের কাহিনী বড়ই করুণ। সম্মেলনের মঞ্চে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার একাধিক প্রতিনিধি চোখের জলে জানিয়ে গেল হাড়ভাঙ্গা কঠোর পরিশ্রমের কথা। সাত আটটা বাড়িতে উদয়াস্ত পরিশ্রমের পর বেশিরভাগ বাড়িতে অশিক্ষিত মদ্যপ স্বামীর অত্যাচারে রাত কাটানোর যন্ত্রণার কথা শুনলে যে কোন সুস্থ মানুষ শিউরে উঠবেন। এর উপর রয়েছে কাজের বোঝা, মাসের শেষে বেতন না পাওয়া, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতা, কখনো কখনো ধর্ষণ ও খুন করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া ইত্যাদি সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে সম্মেলনে। সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভানেত্রী লিলি পাল। মূল প্রস্তাব পাঠ করেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জয়শ্রী চক্রবর্তী। এ আই ইউ টি ইউ সি অনুমোদিত সারা বাংলা পরিচারিকা সমিতির রাজ্য সম্পাদিকা পার্বতী পাল বলেন-দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে সমাজের অবহেলিত শ্রেণীর মা বোনদের নিয়ে এই সংগঠন নানান স্তরে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সপ্তাহে একদিনের ছুটির দাবি আদায় করতে পেরেছি। বাকি দাবি আদায়ে আন্দোলন জারি রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সম্মেলনে বক্তব্য দেন এ আই ইউ টি ইউসি’র রাজ্য নেতা নন্দ পাত্র ,মধুসূদন বেরা প্রমুখেরা। সম্মেলনে পার্বতী পালকে সভানেত্রী,জয়শ্রী চক্রবর্তী ও শোভা মাহাতোকে যুগ্ম সম্পাদিকা করে ৫০ জনের সারা বাংলা পরিচারিকা সমিতির রাজ্য কমিটি গঠিত হয়েছে।