নিজের মেয়েকে ধর্ষণ এর অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল বাবা। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকার জরিমানা অনাদায় অতিরিক্ত দুবছর আশ্রম কারাদন্ড নির্দেশ দিলেন কাঁথির পকসো আদালতের বিচার অজয়ন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। ১৪ বছরের শিশু কন্যার উপর তার বাবা দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে বাড়িতে নাবালিকার মায়ের অনুপস্থিতিতে। কর্মসূত্রে রামনগর থানার বেলতলা মামনি ইটভাটাতে স্বামী স্ত্রী দুজনেই কাজ করতো। বাড়িতে দাদু ঠাকুমার সঙ্গে থাকতো নাবালক নাবালিকা ভাই বোন। সন্ধ্যার সময় কাজের শেষে বাড়িতে ছেলেমেয়েদের দেখার নাম করে বাড়ি আসতো অভিযুক্ত বাবা। বাড়িতে সুযোগ বুঝে দিনের পর দিন নিজের নাবালিকা কন্যার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে ভয় দেখা তো।
নির্যাতিতা ভয়ে ঘটনার কথা না জানালেও পরে তার মাকে জনায় বাবার কুকীর্তির কথা। প্রতিবাদ করলে নাবাল নাবালিকা সন্তান সমেত স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় অভিযুক্ত। এরপর রামনগর থানায় অভিযোগ জানায় নির্যাতিতা নাবালিকার মা। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ মামলা রুজু করে এম/এস৩৭৫(২)(রোমান এক) আই পি সি এবং পকসো অ্যাক্ট অর্থাৎ ধর্ষণ এবং পকসো মামলায় কেস রুজু হয়।একই দিনে গ্রেপ্তার হয় অভিযুক্ত বাবা। বারংবার জামিনের আবেদন করলেও তা নাকোচ হয়। প্রায় এক মাসের মধ্যেই তদন্ত শেষ করে চার্জশিট জমা দেন রামনগর থানার তদন্তকারী অফিসার। বিচার শুরু হয় পকসো বিশেষ আদালতে। সরকার পক্ষের আইনজীবী ছিলেন দীপান্বিতা বেরা। মামলায় পিতা সহ ৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালতের বিচারক অজয়েন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য। নির্যাতিতার জবানবন্দি ও ডাক্তারি পরীক্ষার কাগজপত্র প্রমাণ হয় আদালতে। বিচার শেষে আসামীকে ইংরেজি ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ দোষী সাব্যস্ত করেন অজয়েন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য।বুধবার সরকারি আইনজীবী দীপান্বিতা বেরা জানান আজ বিচারক সাজা ঘোষণা করেছেন। দোষীর যাবজ্জীবন কারাদন্ডের এর বিরুদ্ধে ৫০,০০০ টাকা জরিমানা অনাদায়ে দুই বছর কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। এই সাজার পাশাপাশি নির্যাতিতাকে চার লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণেরও নির্দশ দিয়েছেন বিচারক অজয়েন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য। আইনজীবী দীপান্বিতা বেরা জানান কাঁথির পকসো আদালতের ইতিহাসে আজ পর্যন্ত এটাই সর্বোচ্চ সাজা। নির্যাতিতার পরিবার এই রায়ে খুশি। আসামির তরফে এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।