শিক্ষকের প্রতি ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো শিক্ষার্থীরা। প্রিয় শিক্ষকের বিদায় বেলায় সাবেক, বর্তমান শিক্ষার্থী ও সহকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন এগরা শারদা শশীভূষণ কলেজের অধ্যক্ষ ড: দীপক কুমার তামিলী। শুক্রবার অধ্যক্ষ অবসরগ্রহণ উপলক্ষে রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, সহকর্মী ও এলাকাবাসী। শেষ দিনে
অধ্যক্ষকে ফুল দিয়ে বরণ করে কলেজে নিয়ে আসেন ছাত্র ছাত্রীরা । তারপর মঞ্চে উঠিয়ে সংবর্ধনা দেন। এ সময় চারপাশে পরিবেশ যেন ভারি হয়ে উঠে। শিক্ষাগুরুর ভালোবাসার স্মৃতিচারণ করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
স্যারের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কলেজের শিক্ষাকর্মী উদয় শঙ্কর পাল বলেন, স্যারের শূন্যতা কখনই পূরণ হবার নয়। স্যার খুব ভালো অধ্যক্ষ ছিলেন। স্যারকে আমরা আমাদের ছাত্র জীবনের শুরু থেকেই দেখেছি তিনি কখনোই সময়ের অপব্যবহার করতেন না। যথাসময়ে আসতেন এবং যথাসময়ে চলে যেতেন। যার কারনে কেউ ফাঁকিবাজি করার সুযোগ পেতো না। স্যার দক্ষতার সাথে কলেজ পরিচালনা করতেন। আমার মতো একটি সাধারণ বাড়ির ছেলেকে তুলে এনে এই কলেজে কাজ দিয়েছিলেন। আজ আমার জে টুকু নাম, খ্যাতি, সম্মান হয়েছে সব টাই স্যারের দেওয়া।
অধ্যক্ষ ড: দীপক কুমার তামিলি ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী এগরা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হন। তখন কলেজের একটি মাত্র বিল্ডিং ছিল। তাঁর পরে কেটে গেছে দীর্ঘ ২৫ বছর। দীপক বাবুর সময়েই তৈরী হয়েছে অত্যাধুনিক সায়েন্স ল্যাব, ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ইনডোর স্টেডিয়াম, লাইব্রেরি, জিম, পার্ক থেকে শুরু করে অনেক কিছুই। বিদায়ী অধ্যক্ষ দীপক তামিলি বলেন, আজ মন ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে, দীর্ঘ ৪২ বছরের কর্মজীবনের ২৫ বছর এই কলেজে কেটেছে, অনেক কিছুর সাক্ষী আমি। অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। কলেজের কোনায় কোনায় আবেগ জড়িয়ে রয়েছে তাঁর। কাল থেকে আমার কর্মজীবন শেষ। মন না চাইলেও সরকারি নিয়মতো মানতেই হবে। তবে ছাত্র ছাত্রীরা আমাকে ডাকলে আমি নিশ্চই আসবো। আমি এই কলেজ ও ছাত্র ছাত্রীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করছি। বেশ কয়েকটি বেসরকারি কলেজের সাথে কথা হচ্ছে। হয়তো আগামীদিনে কোথায় যোগ দিতে পারি। সেটা সময় কথা বলবে। এদিন এগরা সারদা শশীভূষণ কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হলেন চয়ণ রঞ্জিত। তিনি জানিয়েছেন, এই কলেজের শিক্ষা ও পরিকাঠামো এবং মানোন্নয়ন ঘটিয়ে আগামীদিনে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় আমাদের মূল লক্ষ্য।

