কাটমানি দিলেই মিলবে আবাসের ঘর। আর তা দিতে না রাজি হলে বাড়িতে চড়াও হয়ে প্রাণনাশের হুমকি। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের উপভোক্তার। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা ১ ব্লকের বরিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তনা গ্রামে। এবারের আবাস যোজনার তালিকায় বর্তনা গ্রামের বাসিন্দা ঝন্টু জানার নাম আবাসের তালিকায় আসার পর স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য প্রভাত ভুঁই উপভোক্তা ঝন্টু জানার কাছে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন। ঝন্টু জানা টাকা দিতে অস্বীকার করেন। পাশাপাশি তিনি বিডিও, এসডিও, জেলাশাসকের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানান। লিখিত অভিযোগের কথা জানতে পেরে গত ২৮ জানুয়ারি বেশ কিছু তৃণমূলের হার্মাদ বাহিনী ঝন্টু জানার বাড়িতে চড়াও হয়ে গালি গালাচ করে। পাশাপাশি ঝন্টু জানাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়। এরপরে ঝন্টু জানা ৩০ জানুয়ারি এগরা থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। প্রসঙ্গত, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী দলীয় কর্মী ও প্রশাসনিক আদিকারিকদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে উপেক্ষা করেই চলছে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ। বারবার কাটমানি নেওয়ার শিরোনামে উঠে এসেছে তৃণমূল পরিচালিত বরিদা গ্রাম পঞ্চায়েত। যদিও তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য প্রভাত ভুঁই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে বরিদা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সিদ্ধেশ্বর বেরা জানিয়েছেন, অভিযোগকরির নাম সরকারি তালিকায় রয়েছে। নিশ্চিতভাবে দেরি হলেও তিনি টাকা পাবেন। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। যে তৃণমূল সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে উনি খুবই দরিদ্র পরিবারের একজন লোক।
উনি সততার সাথে কাজ করেন। তবে এ প্রসঙ্গে এগরা ১ ব্লকের বিরোধী দলনেতা তাপস কুমার দে জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন শাসক দলের নিচের লেভেলের লোকেরা কাটমানি আদায় করছে। আমরাও খবর পেয়েছি বরিদা অঞ্চলে এই সব হচ্ছে। পুলিশের উচিত অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা। এগরার বিধায়ক তরুণ কুমার মাইতি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার কোনোভাবেই কাটমানির দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। আমি বিষয়টি নিয়ে নিশ্চই দেখবো। যদি কেউ সত্যিকারের দোষী হয় পুলিশকে বলবো তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। কিন্তু অভিযুক্ত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে দল এবং পুলিশ -প্রশাসন কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেটাই এখন দেখার বিষয়। এই ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়।

