দেশ যেদিন স্বাধীন হল লক্ষিবালা মাইতি সেদিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটেরই এক গ্রামের সাতাশ বছরের চাষিবাড়ির গৃহবধূ।আজ তিনি ছয় ছেলে মেয়ে, আঠারো নাতিনাতনী, সাত নাতজামাই, সাত নাতবৌর সংসারের বটবৃক্ষ।
শতবর্ষ আয়ু পার করে নুয়ে পড়া শরীরে লক্ষিবালা আজো সংসারের উপার্জনশীল স্বনির্ভর বটবৃক্ষ।কোলাঘাট নতুন বাজার হাটের সবজি বিক্রেতা। অস্পষ্ট স্মৃতি হাতড়ে নিজের চোখে দেখা ‘ওলাউঠো লালমুখোদের’ গল্প শোনান। মনে করিয়ে দেন- ষোলোআনায় রূপনারায়নের ষোলোটি ইলিশ, সাতআনায় একমন ধান, তিন টাকায় সোনার নাকছাবি,
সারাদিন গতর খাটিয়ে মজুরি দু-আনা এইসব কথা।
এহেন বিস্ময় ও প্রবীনা স্বয়ংসিদ্ধাকে দিয়ে স্বাধীনতার ৭৬তম বর্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করালেন কোলাঘাট তথা জেলার বহুল পরিচিত স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান সংকেত ক্লাব। শ্রদ্ধা নিবেদন দেশমাতৃকার উদ্দেশ্যে।
এদিন সকালে কোলাঘাট রাধামাধব মন্দিরে প্রথমে লক্ষ্মীবালা কে চন্দন, উত্তরীয় ফুলের মালায় বরণ করে নেওয়া হয়। এরপর চাপানো হয় সুস্বজ্জিত চার বেয়ারার পালকিতে। সাথে ছিল অসংখ্য জাতীয় পতাকা ও দেশমাতৃকার জয়ধ্বনি। ছিল খোল করতাল শঙ্খধ্বনী সহযোগে হরিনাম সংকীর্ণতের দল। স্বাধীনতা দিবসের এই অভিনব শোভাযাত্রা শহর পরিক্রমার পর সংকেত ক্লাব প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন শতায়ু লক্ষ্মীবালা মাইতি।
সংস্থার পক্ষে শ্যামল আদক জানান, স্বাধীনতা বর্ষের এবার হল ঐতিহাসিক বছর। এবার এই প্রবীনতম মাতৃসমাকে দিয়ে পতাকা উত্তোলন করিয়ে আমরা অমর শহীদ এবং দেশমাতৃকার উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করলাম।