Select Language

[gtranslate]
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

।। মহিষমর্দিনী বক্রেশ্বর শক্তিপীঠ ।।

পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার সিউড়ি শহর থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে পাপহরা নদীর তীরে অবস্থিত ” মহিষমর্দিনী বক্রেশ্বর শক্তিপীঠ ” । মন্দিরের স্থাপত্য রেখ দেউলরীতির ধাঁচের । মন্দির অভ্যন্তরে মা ” মহিষমর্দিনী ” ও বাবা ” বক্রেশ্বর ” এর মন্দির আছে । প্রাক্তন প্রাচীন দেবীর প্রাচীন চিত্রকর্ম গুলি ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ দ্বারা সুরক্ষিত ।

দেবী সতীর ” ভ্রুমধ্য ( ভ্রু যুগলের মধ্যবর্তী ) বা ওনার মন ” এইস্থানে পতিত হয়েছিল ।

শিব বিহীন দক্ষ যজ্ঞে স্বেচ্ছায় প্রান বিসর্জন কারিনী সতীর দেহ ভগবান বিষ্ণু সুদর্শন চক্র দিয়ে খন্ডিত করেছিলেন । সেই খন্ডিত অংশ গুলি পরে এক একটা শক্তিপীঠ উৎপত্তি হয়েছে ।

এখানে দেবী ” মহিষমর্দিনী ” ও বাবা ভৈরবনাথ ” বক্রনাথ বা বক্রেশ্বর ” নামে পুজিত হন । দেবীর পিতলের প্রতিমা ও দশভুজা ।

কথায় আছে, সত্যযুগে লক্ষী- নারায়ণ এর বিয়েতে সুব্রত মুনিকে খুব অপমান করেন দেবরাজ ইন্দ্রদেব । রাগে সুব্রত মুনির শরীর আট বাঁকে বেঁকে যায় । তিনি “অষ্টাবক্র” ৠষি নামে পরিচিত হন । মহামুনি “অষ্টাবক্র” এখানে শিবের তপস্যা করতে থাকেন আর পাপহরা নদীতে স্নানের পর পাপমুক্ত হন। তাই তার নামে মহাদেবের নাম এখানে “বক্রেশ্বর ও বক্রনাথ” । এটি অন্যতম একটি মহাশক্তি পীঠ হিসাবে বিবেচিত।

পাপহরা নদী পাপমুক্ত করে বলে ৠষি অষ্টাবক্র মহামুনি স্নান করেছিলেন । এই অঞ্চল বিশেষ করে তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত । এই অঞ্চলের আশেপাশে দশটি উষ্ণ প্রস্রবণ রয়েছে । সেগুলো হল – পাপহরা গঙ্গা, বৈতরণী গঙ্গা, খরকুন্ড, ভৈরবকুন্ড, অগ্নিকুণ্ড, দুধকুন্ড, সূর্যকুন্ড, শ্বেতগঙ্গা, ব্রহ্মাকুন্ড , অমৃতকুন্ড । খর, ভৈরব ও সূর্যকুন্ডের জলে তাপমাত্রা যথাক্রমে ৬৬, ৬৫, ৬১ ডিগ্রি গরম । অগ্নিকুণ্ডের তাপমাত্রা ৮০ ডিগ্রি গরম । এই জলে সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যলসিয়াম, সিলিকেট, ক্লোরাইড, বায়োকার্বোনাইড ও সালফেট পাওয়া যায় । যা ঔষধী গুন সম্পন্ন । এই কুন্ড গুলিতে স্নান করলে রোগ মুক্তি হয় । দুধকুন্ডের তাপমাত্রা ৬৬ ডিগ্রি গরম । এছাড়াও এই জলে রেডিও অ্যাকটিভ উৎপাদনও পাওয়া যায় । সকালের দিকে কুন্ডের জলে ওজোন ঘনীভূত সাদা আস্তারন পদার্থ সৃষ্টি হয় । প্রতিটি প্রস্রবণের কাছে শিবলিঙ্গ আছে । শ্বেতগঙ্গার কাছে অনেক পুরনো বট গাছের তলায় ভগ্ন “হরগৌরী” মুর্তি আছে ।

” বক্রেশ্বর ” শব্দটি স্থানীয় বক্রেশ্বর শিবের নামানুসারে , বক্র শব্দের অর্থ হল বাঁকা ও ইশ্বর অর্থ হল ভগবান । “বক্রেশ্বর” শক্তিপীঠ ৫১ শক্তিপীঠের মধ্যে একটি অন্যতম শক্তিপীঠ ও হিন্দুদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ন পীঠস্থান । কথিত আছে যে, সতীর ত্রিনয়ন এখানে আছে। দেবী এখানে দশভুজা রূপে পূজিত হন।

এখানে সব উৎসব খুব উৎসাহ নিয়ে পালন করা হয় । বিশেষ কিছু পূজো খুব ধুমধাম করে করা হয় , যেমন নবরাত্রি, শিবরাত্রি, মকর সংক্রান্তি, দূর্গা পুজো, গাজন ইত্যাদি এছাড়াও সোমবার ও অমাবস্যাতে ভক্তদের ভিড় থাকে ।

ekhansangbad
Author: ekhansangbad

Related News

Also Read