Select Language

[gtranslate]
৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

।। সকলেরই প্রায় অজানা ।।

বিজয় সাধু খাঁ

ভারতের এক বিখ্যাত সন্ত সরাসরি ভগবানকে _বলেছিলেন

– ” হাত ছাড়িয়ে যাচ্ছো, হৃদয় ছেড়ে গিয়ে দেখাও” – এমন কথা বললেন- কে তিনি?

স্বয়ং ভগবান এসে শুনতেন যাঁর ভজন,অথচ অন্ধ ছিলেন -একটু জানুন –

– স্বামী হরিদাস,মিরাবাই এর মতোই সঙ্গীতের মাধ্যমে ভগবানকে প্রাপ্ত করেছিলেন সন্ত সুরদাস জী – তাঁর বিখ্যাত পদ –
“प्रभू मोरे अवगुण चित न धरो ।
समदरसी है नाम तिहारो, चाहे तो पार करो ” ॥

মধ্যযুগে ষোড়শ শতকে দিল্লির নিকটবর্তী সিরি নামক এক গ্রামে স্বারসত ব্রাহ্মণ পরিবারে সুরদাসজী জন্মগ্রহণ করেন, ১৪৭৮ সালে।

ভক্তমাল গ্রন্থে জানা যায়,সুরদাসজী জন্মাবধি অন্ধ ছিলেন।একটি পিপুল গাছের নীচে বসে ভজন গাইতেন। তিনি নিয়মিত কৃষ্ণের ভজন গাইতেন।
এটা দেখে এক সাধু তাকে বললেন –“কোনো মন্দিরে যান, আর ওখানে ভজন গান করুন “।

তিনি তাই করলেন। চলে গেলেন মথুরার এক মন্দিরে,আর বসে বসে ভজন গাইতেন।না কিছু দেখতে পেতেন, না ভগবানের বিগ্রহকে কোনো দিন দেখেছেন। তবু সুন্দর খুব ভালো ভজন গাইতেন।

জানা যায়,তিনি পুষ্টিমার্গীয় ধারায় দীক্ষিত হয়েছিলেন। মহাপ্রভু শ্রীবল্লভাচার্যদেবের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন।ধীরে ধীরে তিনি ভজন সিদ্ধ হয়ে উঠলেন।

বলা হয়,ইনি যখন কৃষ্ণ-মন্দিরে ভজন গাইতেন তখন ভগবান কৃষ্ণের দর্শন পেতেন মনোমন্দিরে। ভগবান কৃষ্ণ তাকে কৃপা করে সত্যিই দর্শন দিতেন, স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ সুরদাসের ভজন শোনার জন্য আসতেন,বালক রূপে তাঁর নিকট বসে থাকিতেন।


জানা যায়,একদিন সুরদাসজী মন্দিরের পূজারীকে বললেন–“ভগবানকে(বিগ্রহকে) হলুদ বসনে সুন্দর লাগছে”।


পূজারী বললেন–“তুমি কি করে বুঝলে? তুমি তো দৃষ্টিশক্তিহীন।”

তখন সুরদাসজী বললেন- “আমি প্রতিদিন ভগবানের দর্শন পাই;তবে দৃষ্টি শক্তিতে নই মনের দৃষ্টিতে দর্শন পাই।”
পূজারী পরীক্ষা করার জন্য পরের দিন ভগবানের বিগ্রহকে নীল বসন পরালেন।

সুরদাসজী বলে উঠলেন–“বাহ! আজ ভগবানকে নীল বসনে আরো খুব সুন্দর লাগছে”।
পূজারী তো অবাক হলেন।
পরের দিন পূজারী ভগবানের বিগ্রহে কোনো বসন দিলেন না। পত্র দিয়ে ঢেকে দিলেন।
পরের দিন সুরদাস তার ভজনে গেয়ে উঠলেন
–“ভগবান গরীব হুয়ে আজ, পত্তো মে বিরাজে”।

পূজারী সহ মন্দিরের সকলে শুনে বিস্মিত হয়ে গেলেন।
খুব প্রসিদ্ধ একটি ঘটনা জানা যায়,
একদিন বৃদ্ধাবস্থায় পথ চলতে চলতে এক কুপের মধ্যে পড়ে যান এবং সেখানে আকুলভাবে কৃষ্ণের দর্শন ও সাহায্য প্রার্থনা করেন।পরে ভগবানের কৃপা হইল ; তিনি তাহার শ্ৰীহস্তে সুরদাস কে উঠালেন, নিজ স্পর্শে সুরদাসকে দৃষ্টি দিলেন ।

জন্মান্ধ সুরদাস নবলব্ধ দৃষ্টির সম্মুখে প্ৰথমে শ্ৰীভগবানের অপরূপ রূপ দেখিয়া মুগ্ধ হইয়া তাহার হাত ধরিলেন ।তখন ভগবান সে হাত ছাড়িয়ে চলে যেতে লাগলেন,তখন সুরদাস জী গেয়ে উঠেছিলেন সেই বিখ্যাত ভজন
– ” बाहें छोड़कर जाते हो दुर्बल जानके मुझे,हृदय सो जब जइयो तब जानिए शक्तिमान तुझे !! “-
– “হাত ছাড়িয়ে যাচ্ছ প্রভু দুৰ্বল জেনে আমায়, বুঝিব তোমার শক্তি হৃদয় থেকে বেড়িয়ে গিয়ে দেখাও “।

আজও সন্ত সমাজে ভক্ত সুরদাসের জয়ধ্বনি দেওয়া হয়।

ekhansangbad
Author: ekhansangbad

Related News

Also Read