অমিত রায়:-প্রায় এক বছর হতে চললো পারিবারিক মতে রমা আর নিলয়ের বিয়ের।
নিলয় ছিলো শান্ত আর সহনশীল স্বভাবের। বিপরীতে রমা ছিলো লোভী আর কামুক প্রকৃতির নারী। তাই বিয়ের এক বছর হলেও রমার শারীরিক চাহিদা ছিলো বড্ড। যেখানে রমা নিলয়কে ব্যর্থ বলে অনেক কথা শুনাতো। নিলয় মার্কেটিং প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো। শত কাজের মাঝেও রমাকে সময় দিতে ভূলতোনা তবুও রমার কিছুতে শান্তি হতোনা।
অনেক পুরুষ বন্ধুর সাথে সময় কাটাতো রমা। অফিস থেকে ফিরে নিলয় বেশীরভাগ দিন রমাকে বাড়ী পেতোনা। তবুও নিলয় সংসারের শান্তির জন্য সব মুখ বুজে সহ্য করতো। আর ভাবতো একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু যত দিন বেড়েছে রমার শারীরিক চাহিদার ইচ্ছে ও বেপরোয়া জীবন তত বৃদ্ধি পেয়েছে। নিলয় স্বামী হয়ে স্ত্রীকে সব সুখ দিলেও রমা তাকে অক্ষম পুরুষ বলে অপমান করতো।
এরপর একদিন সকালে নিলয় ঘুম থেকে উঠে একটা চিরকুট পায় সেখানে রমা লিখেছে শুধু স্বামী হলে হয়না বরং শরীরের সুখটাও একজন নারীর ভীষন প্রয়োজন যা মেটাতে তুমি অক্ষম আর আমি স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই। কারন জীবনটা আমার তাই যৌবনের সুখ আমি আরও পেতে চাই।
তাই চললাম নতুন জীবনের খোঁজে আর ডিভোর্সের কাগজে স্বাক্ষর করে দিও। কথাগুলো পড়বার পর নিলয় বুঝলো যে থাকবার নয় তাকে জোর করে রাখা যায়না। তাই ডিভোর্স পেপারে স্বাক্ষর করে নিলয় রমাকে মুক্তি দিলো। এরপর নিলয় ঠিক করলো সে একা থাকবে।
তাই শান্তি প্রিয় নিলয় নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। এরপর নিলয়ের অফিস পরিবর্তন হয়ে অন্য শহরে গেলে সেখানে শিক্ষিত, সুন্দরী, মার্জিত নতুন সহকর্মী মোহরের সাথে আলাপ হয়। আলাপের সময় নিলয় মোহরকে নিজের সব কিছু বলে। নিলয়ের আচরন, ব্যবহার, সততা আর ব্যাক্তিত্বে মুগ্ধ হয় মোহর।
এরপর একদিন মোহর নিলয়কে বলে আমি তোমায় ভালোবাসি নিলয়। তখন নিলয় বলে আমার আর কোন সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়ার ইচ্ছে নেই। কারন আজ নারীরা শুধু বোঝে শরীরের চাহিদা, ভালোবাসা বোঝেনা।
তাই কোন সম্পর্কে আমি আর জড়াতে চাইনা দুঃখীত আমি ক্ষমা করো মোহর। তখন মোহর বলে সব নারী সমান নয়, সব নারী শুধু শরীর চায়না, সব নারী লোভী নয়। এখনও কিছু নারী আছে যারা মনকে প্রাধান্য দেয়।
সে দেখতে কেমন, তার কত টাকা পয়সা আছে, সেই পুরুষ কতোটা শারীরিক সুখ দিতে পারবে এসব চিন্তা করেনা। শুধু চায় সেই পুরুষটি যেন তাকে ভালোবাসে। মোহর নিলয়কে বলে তুমি যেমন আমি ঠিক তোমায় তেমন করে ভালোবাসবো। তোমার অনুভূতি, তোমার স্বত্বা, তোমার শরীরের গন্ধ, আর তোমার ভালোবাসাই আমার কাছে আসল।
কারন আমি তোমায় সত্যি ভালোবাসি যেখানে নেই কোন হিসেব নিকেশ। মোহরের কথাগুলো শুনে আবেগ আপ্লুত হয়ে নিলয় বললো আসলেও আমিও যে ভালোবাসাকে নিয়েই বাঁচতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেই অনুভবটা আর পেলাম কোথায়? কিন্তু মোহর তোমার এই কথাগুলো শুনে কেন জানি আবার নতুন বাঁচতে মন চাইছে।
তুমি আমায় সত্যি ভালোবাসতো? কথাগুলো শুনে তখন মোহর বললো আমি তোমায় ভালোবেসে তোমাকে নিয়েই থাকতে চাই এটাই আমার নারীত্বের শ্রেষ্ঠ উপলব্ধি আর আমি কিছুই চাইনা। এরপর নিলয় পেলো নতুন করে ভালোবাসার গতিপথ।
আসলে ব্যস্ততার অছিলায়, চাওয়া পাওয়ার মাঝে আজ আমরা সবাই ভালোবাসাকে বিভিন্ন রুপে পেতে চাই। কিন্তু সত্যিকারের ভালোবাসা নিঃস্বার্থ হয় সেটা আমরা অজান্তে কখনও ভূলে যাই। পরিশেষে পৃথিবীর সকল প্রিয়জন শরীরের ভালোবাসায় মত্ত না হয়ে মনের ভালোবাসাকেই শ্রেষ্ঠ বলে আঁকড়ে ধরুক তবেই ভালোবাসা পাবে ঠিকানা।
সৌজন্যে প্রতিলিপি