প্রদীপ কুমার মাইতি:-মাস ঘুরতে না ঘুরতেই মুখ্যমন্ত্রী সাধের তৈরি দিঘা মন্দারমনি মেরিন ড্রাইভ এর কঙ্কাল সার চেহারা দেখা দিল। কার্যত দিঘা থেকে মান্দারমনি যাওয়া এখন সম্পূর্ণ বন্ধ। বিশেষ করে শংকরপুর থেকে তাজপুর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তা এখন বড় বড় গর্ত , আর তার মধ্যেই ছোটখাটো দুর্ঘটনা প্রায়ই লেগে থাকছে।
তাই রাস্তার শুরুতেই বোল্ডার ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হলো মেরিন ড্রাইভের সেই রাস্তা। প্রসঙ্গত, দিঘা থেকে মান্দারমনি পর্যন্ত প্রায় ২৯ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে তৈরি হয়েছিল মেরিন ড্রাইভ, যার মধ্যে রয়েছে তিনটি ব্রিজ।
এই রাস্তার জন্য খরচ হয়েছে ১৭৩ কোটি টাকা । তার মধ্যে ১৬১ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে তিনটি ব্রিজ তৈরির জন্য আর বাকি টাকা ব্যয় হয়েছে রাস্তা তৈরির জন্য, এই রাস্তা কার্যত তিনটি দপ্তর মিলে করেছে তার মধ্যে রয়েছে দিঘা শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদ, পি ডব্লু ডি, এবং সেচ দপ্তর।
যে রাস্তাটি এখন বেহাল অবস্থা তা সেচ দপ্তরের অধীনে পড়ে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে এসে এই মেরিন ড্রাইভের উদ্বোধন করেছিলেন। আর সেই উদ্বোধনের পরেই মাস ঘুরতে না ঘুরতেই রাস্তার কঙ্কালসার চেহারা ফুটে উঠলো।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এর আগের রাস্তা বরং অনেক ভালো ছিল, এখন সমুদ্রের ঢেউ আর নিম্নমানের কাজের ফলে এই রাস্তা আরো খারাপ হয়ে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কেবলমাত্র মুখ্যমন্ত্রীকে খুশি করার জন্যই তৈরি করে তড়িঘড়ি এই রাস্তা উদ্বোধন করা হয়েছিল । তার ফলে এই রাস্তা করার জন্য বেহাল চিত্র ফুটে উঠেছে ।
অপরদিকে রামনগর বিধানসভা প্রাক্তন বিধায়ক তথা বর্তমান বিজেপি নেতা স্বদেশ নায়ক বলেন, এখান থেকে কাটমানি খাওয়ার জন্য আর সরকারকে খুশি করার জন্যই তড়িঘড়ি করে এই তৈরি করা হয়েছিল ও তার উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাস্তবে কোন কাজ হয়নি কেবলমাত্র নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে এই কাজ করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এবং সেই সঙ্গে তিনি জানান, এই বাঁধকে রক্ষা করতে হলে কিংবা এলাকার মানুষকে রক্ষা করতে হলে এক কিলোমিটার কংক্রিটের ঢালাই করলে তবেই এই বাঁধ রাখা সম্ভব সম্ভব।
যদিও বা এই মেরিন ড্রাইভের বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন রামনগরের বিধায়ক তথা রাজ্যের কারাগার মন্ত্রী অখিল গিরি বলেন মুখ্যমন্ত্রী এই মেরিন ড্রাইভের উদ্বোধন করেছেন তবে উদ্বোধনের সময় বেশ কিছু রাস্তা তৈরি হয়েছিল না আর বৃষ্টির ফলে এই রাস্তা আরো খারাপ হয়ে গেছে বৃষ্টি কমলে তা আবার নতুন করে কাজ শুরু হবে ফলে পর্যটকদের আর যাতায়াতের অসুবিধা হবে না বলে তিনি জানান।
এক পর্যটক প্রমদ আগারওয়াল জানান, এই রাস্তা এখন কার্যত যাতায়াতের অনুপযোগী এই রাস্তায় কোন খাবার-দাবার নেই বসার জায়গা নেই এই রাস্তা, যাতায়াতের একদম অনুপযুক্ত। হয়ে উঠেছে কবে এই রাস্তা আবার সুন্দর তবে কবে পর্যটকদা এক সূত্রে দীঘা, তাজপুর, মন্দারমনি, শঙ্করপুরকে ,দেখতে পারেন তা ভবিষ্যতই বলবে।