থ্যালাসেমিয়ার সাথে লড়াই করেই ডাক্তারি পড়ায় সুযোগ পেলেন বর্তমানে মেদিনীপুর শহরের মেদিনীপুর বিধান নগরের বাসিন্দা ইন্দ্রানী বিশ্বাস। সর্বভারতীয় NEET-পরীক্ষায় এবছর সাফলো সাথে উত্তীর্ণ হয়েছেন ইন্দ্রানী।আর ইতিমধ্যেই MBBS পড়ার জন্য ভর্তি হয়েছেন কলকাতার ঐতিহ্যবাহী নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে।
জন্মের সাতমাস পরেই ইন্দ্রানীর বাবা পেশায় স্কুল শিক্ষক অভিজিৎ বিশ্বাস এবং মা গৃহবধু তনুজা বিশ্বাস জানতে পারেন তাঁদের কন্যা থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। সেদিন থেকেই শুরু হয় লড়াই।প্রথম দিকে মাসে একবার করে রক্তের প্রয়োজন হতো ইন্দ্রানীর। এখন মাসে দুবার কলকাতায় গিয়ে রক্ত নিতে হয় ইন্দ্রানীকে।
অসম্ভব মনের জোর আর বাবা-মায়ের উৎসাহকে সাথে নিয়ে বরাবরই ভালো রেজাল্ট করে এসেছে মেধাবী ছাত্রী ইন্দ্রানী। ইন্দ্রানীদের আদি বাড়ি বাঁকুড়া জেলার নিবড়া গ্রামে হলেও,এখন বাবা-মা ও ভাই সর্বমান বিশ্বাসের সাথে মেদিনীপুর শহরের বিধাননগরে থাকে ইন্দ্রানী।
পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ইন্দ্রানী পড়াশোনা করেছে বাঁকুড়া জেলার গড়গড়িয়া সুভাষ হাইস্কুলে।এরপর ২০১৯ সালে মেদিনীপুর শহরের নির্মল হৃদয় আশ্রম স্কুলের বালিকা বিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় ইন্দ্রানী।ইন্দ্রানীর চলার পথটা মোটেই মসৃণ ছিল না। চিকিৎসার কারণে অনেক সময়ই ভর্তি থাকতে হয়েছে হাসপাতালে বা নার্সি হোমে। তাও জেদ ছাড়েনি ইন্দ্রানী।
সেই অবস্থতেই সে লড়াই লড়াই চালিয়ে গেছে। করোনার সময় ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে রক্ত পাওয়া একসময় দুষ্কর হয়ে গিয়েছিল ।সেই সময়ও বাবা-মা ও শুভানুধ্যায়ীদের সাথে নিয়ে জীবন যুদ্ধের লড়াই চালিয়ে গেছে। চিকিৎসা জনিত কারণে ও শারীরিক দুর্বলতো কারণে মাঝে মাঝে পড়াশুনো ছেড়ে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলেও ইন্দ্রানী তার লক্ষ্যে ছিল অবিচল।আর সেই আত্মবিশ্বাস,লড়াই এবং বাবা-মা লড়াই,ভালোবাসা,উৎসাহ এবং শুভানুধ্যায়ীদের উৎসাহে আজ ইন্দ্রানীর লড়াই জয়লাভ করেছে।
আর নিজের মেধা, পরিশ্রম ও যোগত্যায় মেডিক্যাল পড়ার শুধু নিজের না, এরকম আরো অনেক মানুষের লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়ালো ইন্দ্রানী।যেহেতু ওর জীবনযুদ্ধের লড়াই রক্তের জন্য তাই ভবিষ্যতে ইন্দ্রানীয ইচ্ছে হেমাটলজি নিয়ে পড়াশুনো করার।