স্বামী গম্ভীরানন্দ :- ডাক্তার প্রাণধনবাবু প্রথম প্রথম যখন আসেন, তখন তাঁহাকে ষোল টাকা করিয়া ভিজিট এবং পাঁচ টাকা ট্যাক্সি ভাড়া দেওয়া হইত।
একদিন মায়ের জন্য অনেক ফুল, ফল, মিষ্টি,দধি প্রভৃতি আসিয়াছিল। প্রানধনবাবু যথানিয়মে সন্ধ্যার পরে মাকে দেখিয়া যখন নিচে পূজণীয় শরৎ মহারাজের সহিত কথা বলিতেছেন, তখন মায়ের আদেশে প্রচুর ফুল এবং ফলমিষ্টান্নাদি ডাক্তারবাবুর গাড়িতে তুলিয়া দেওয়া হইল।
গাড়িতে উঠিবার কালে ডাক্তারবাবুর মুখ দেখিয়া মনে হইল যে,তিনি জিনিসগুলি পাইয়া খুশিই হইয়াছেন।পরদিনও তিনি রোগী দেখিতে আসিলেন। কিন্ত্ত সঙ্গে সঙ্গে মায়ের ঘর আর একটু ভাল করিয়া নিরীক্ষণ করিলেন, দেখিলেন, সেখানে পরমহংসদেবের ছবি রহিয়াছে।
ডাক্তারবাবু খ্রিষ্টান, কিন্ত্ত তবু তাঁহার উদার মনে এক নূতন ভাবের উদয় হইল। তিনি নিচে গিয়া সারদানন্দজীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “আমি এতদিন কার চিকিৎসা করছি ?”
শরৎ মহারাজ সব কথা খুলিয়া বলিলেন এবং প্রশ্নের উত্তরে ইহাও জানাইলেন যে,চিকিৎসার ব্যয় ভক্তেরাই বহন করিতেছেন।
সহৃদয় ডাক্তারবাবু সেদিন হইতে ভিজিট লওয়া বন্ধ করিলেন। শুধু তাহাই নহে,কিছুদিন পরে যখন চিকিৎসার পরিবর্তন হইল তখনও তিনি নিজব্যয়ে ট্যাক্সি করিয়া প্রতি সন্ধ্যায় আসিতেন এবং অনেকক্ষণ থাকিয়া মায়ের সংবাদ লইতেন।