প্রদীপ কুমার মাইতি :- প্রধানমন্ত্রী ‘আবাস প্লাস’ প্রকল্পে দারিদ্রসীমার নিচে বাস করেও তপশীলি সম্প্রদায়ভুক্ত উপভোক্তাদের সার্ভে তালিকায় নাম নেই। এই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল আমজনতারা।
অবশেষে পুলিশ-প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। মঙ্গলবার বেলার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা ১ ব্লকের বরিদা গ্রাম পঞ্চায়েতে।
অভিযোগ, বরিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তনা গ্রামে তপসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত ৫০ টি উপভোক্তা পরিবারের সার্ভে তালিকায় নাম বাদ পড়েছে। পাশাপাশি, তাঁদের বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখা হয়নি বলে আরও অভিযোগ। অথচ, যারা ধনী ব্যক্তি ও পাকার বাড়ি এবং গাড়ি আছে সেই সব উপভোক্তাদের তালিকায় নাম রয়েছে।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে এ দিন পঞ্চায়েতের সামনে বর্তনা গ্রামের আম জনতারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের অভিযোগ, সমিক্ষকদল গ্রামে গ্রামে যাচ্ছেন, তারা শাসকদলের মদতে বেছে বেছে “আবাস প্লাস ” প্রকল্পে ধনী ব্যক্তিরা তালিকায় স্থান পেয়েছে। সেইসঙ্গে উপভোক্তা তালিকা থেকে অনেকে বাদ পড়েছে। আর তাতে ক্ষোভ সামনে আসে।
রামনগরের বাধিয়া পঞ্চায়েতের মতো এবার খোদ এগরার বরিদা গ্রাম পঞ্চায়েতে বিক্ষোভে সামিল হন আমজনতারা। তবে সমস্যার সুরাহা না হলে আগামীদিনে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা।
এ প্রসঙ্গে বরিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধান সিদ্ধেশ্বর বেরা জানিয়েছেন, এই সমস্যাটা আমাদের ব্লকের সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে এলাকায় হয়েছে। যাতে কেউ বঞ্চিত না হয় তাঁদের জন্য আমরা ব্যথিত। এই সমস্যার জন্য আমাদের প্রধান, উপপ্রধান সহ সমস্ত সদস্যরা দায়বদ্ধ।
স্থানীয় বিজেপি নেতা উদয় ঘোড়াই জানিয়েছেন, বিরোধীদের বাদ দিয়ে সার্ভে করা হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা নন্দন মাইতি বেআইনিভাবে আবাস প্লাসের সার্ভে করতে গেছিল। আগামীদিনে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনেও যাব। তবে এ বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত নন্দন মাইতির কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এগরা ১ ব্লকের বিডিও সুমন ঘোষের দাবী, নাম নেই মানে আমাদের তো ইতিমধ্যেই ‘ক্লেমশন অব্জেকশন’ নেওয়া হচ্ছে। সেখানে যার যা অভিযোগ আছে সেগুলো লিখিতভাবে জমা দিলে আমরা সবগুলো পুনরায় সার্ভে করে দেখব। যদি প্রকৃতপক্ষে সে পাওয়ার যোগ্য হয় তাহলে তারা অবশ্যই পাবে।
আগামী ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে দিকে দিকে আবাস প্লাসকে কেন্দ্র করে শাসকদলে বিড়াম্বনা বাড়ছে বলে রাজনৈতিক মহলের অবশ্য ধারণা।