স্বামী গম্ভীরানন্দ
সংকলন
স্বামী চেতনানন্দ
“একদিন বিকেলে চা খেতে খেতে গম্ভীর মহারাজ বললেন, “Do you know the the last message of Sri Krishna ?
আমি বললাম “না” ।
তখন তিনি বললেন , “এই গল্পটা শোনো। শ্রীকৃষ্ণ তাঁর বৃন্দাবন লীলা সাঙ্গ করে কংস _বধ , শিশুপাল _বধ , কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে সারথীর কাজ করে দ্বারকায় অবসর_ জীবন যাপন করছিলেন।
একদিন তিনি কথাপ্রসঙ্গে উদ্ধব কে বললেন, “উদ্ধব, আমার বাণী ভাগবতে এবং গীতায় রয়েছে। তাছাড়া আমার একটি শেষ বাণী আছে, তবে আমি এ পৃথিবী থেকে শীঘ্রই বিদায় নেব।”
উদ্ধব তো হাউমাউ করে কেঁদে কৃষ্ণকে বলল, “প্রভু, আপনি দয়া করে আমাদের ছেড়ে যাবেন না। আপনি ছাড়া এ যদুবংশের কে রক্ষণাবেক্ষণ করবে?
আপনি ধর্মের রক্ষক, বাহক ও প্রবক্তা। আপনার অভাবে জগতে ধর্মের গ্লানি হবে।”
কৃষ্ণ তখন বলছেন, “না, আমার কাজ শেষ হয়েছে, আমাকে শীঘ্রই এখান থেকে যেতে হবে।”
উদ্ধব তখন বলল, “প্রভু , আপনার শেষ বাণীটি তবে দিয়ে যান “
কৃষ্ণ বললেন, “দেখ উদ্ধব , আমি স্বয়ং ভগবান ___ নরদেহ ধারণ করে জীবের দুঃখ মোচনের জন্য জন্মগ্রহণ করলাম , কিন্তু লোকে আমাকে দেখে ভয় পায়। তারা মনে করে আমি ধ্বংসকারী । কুলবধূরা পর্যন্ত আমাকে পথে দেখলে দরজা -জানলা বন্ধ করে।
সেদিন বড় ক্ষিদে পেয়েছিল। এক বুড়ি গরুর দুধ দুইছিল। তাকে বললাম ___ আমার খিদে পেয়েছে , একটু কিছু খেতে দেবে ? সেই বুড়ির দুধের ভাঁড় সঙ্গে সঙ্গে হাত থেকে পড়ে ভেঙে গেল।
সে দৌড়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল। মনে বড় দুঃখ হলো এই ভেবে যে, আমি স্বয়ং ভগবান হয়ে জগতের দুঃখ -কষ্ট নিবারণ করবার জন্যে দিনরাত খাটি, আর এরা সব আমাকে বিভীষিকার মত দেখে ।
জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে আমি তোমাকে এই শেষ কথাটি বলছি যে, আমি স্বয়ং ঈশ্বর হয়েও জগতের সব দুঃখ -কষ্ট লাঘব করতে অক্ষম। …..
সুতরাং , এ জগতে কারও কিছু করার নেই।
(স্বামীজী বলেছেন, জগৎটা কুকুরের বাঁকা লেজ। একে সোজা করবার চেষ্টা করতে করতে আমরাই সোজা হয়ে যাব , জগৎ তেমন তেমনি থাকবে )